এ বছরের মার্চ মাসে দেশে একাধিক তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে, যার ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলগুলোর তাপমাত্রা অনেকটা বেড়ে গেছে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে আবহাওয়া অধিদফতর এ বিষয়ে একটি নতুন পূর্বাভাস প্রদান করেছে, যা ভবিষ্যতে আরও তাপপ্রবাহের সংকেত দিচ্ছে। ২৯ মার্চ শনিবারের পূর্বাভাসে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ দেশের ১৫টি জেলায় বিস্তৃত হয়েছে, এবং তা আরও সম্প্রসারিত হতে পারে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ১৩টি জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছিল। পরবর্তী দিন শুক্রবার এটি আরও বিস্তৃত হয়ে ১৫টি জেলায় পৌঁছেছে। তাপমাত্রার ক্ষেত্রে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাজশাহীতে ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য একটি বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব এলাকার মানুষ অতিরিক্ত গরমে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।
যশোর এবং রাজশাহী জেলার জন্য ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল গত শুক্রবারের সর্বোচ্চ রেকর্ড। ঢাকায়, যদিও তাপমাত্রা একটু কম ছিল, তবে তা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছেছিল, যা ঢাকাবাসীর জন্যও স্বস্তিদায়ক ছিল না। এই তাপমাত্রার প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও পড়েছে, এবং প্রতিটি অঞ্চলে গরমের তীব্রতা বাড়ছে।
শুক্রবারের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, যশোর ও সিরাজগঞ্জ জেলা নিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। পাশাপাশি, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙ্গামাটি, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু অংশের ওপর মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বজায় থাকতে পারে। ঢাকার পাশাপাশি বরিশাল বিভাগও এর আওতাধীন। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে যে, এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
তাপপ্রবাহের ফলে বিশেষত কৃষি ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়তে পারে। কৃষকেরা যেহেতু এই সময়ে চাষাবাদ করছেন, তারা তাপপ্রবাহের কারণে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এমনকি সঠিকভাবে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকলে তা আরও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
তাপপ্রবাহের কারণে সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও তৎপর হয়েছে। জনগণের মধ্যে পানির অভাব দূর করতে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জরুরি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তাপপ্রবাহে আরও বিস্তার লাভের আশঙ্কা থাকায় আবহাওয়া অধিদফতর দেশের বিভিন্ন স্থানীয় প্রশাসনকে তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় সতর্ক করে দিয়েছে। বিশেষ করে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জনস্বাস্থ্য খাতের ওপর চাপ বাড়বে, যার ফলে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা আরও বাড়ানোর প্রয়োজন।