নওগাঁয় আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষির নতুন দিগন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: সোমবার ২৭শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:৫৪ অপরাহ্ন
নওগাঁয় আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষির নতুন দিগন্ত

নওগাঁ জেলার কৃষিতে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার বাড়াতে চলতি অর্থ বছরে ইরি-বোরো মৌসুমে সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতিতে কৃষকরা কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার করে সময়, শ্রম এবং অর্থ সাশ্রয় করতে সক্ষম হবেন। ফলে কৃষকদের জন্য নতুন একটি দুয়ার খুলে গেছে এবং তারা চাষাবাদে সফলতা লাভের আশায় রয়েছেন।


এ বছর জেলার তিনটি উপজেলার কৃষকরা সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। মহাদেবপুর উপজেলার বাগাচারা গ্রামের ৩১ জন কৃষক ১৫০ বিঘা জমিতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। জমি চাষ, সেচ এবং চারা রোপন প্রক্রিয়ায় তারা রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের ব্যবহার করছেন। উন্নত জাতের ব্রি-১০৪ বা বাসমতি ধানের বীজ দিয়ে ট্রেতে চারা তৈরি করা হয়েছে এবং সেগুলি মেশিন দিয়ে জমিতে রোপন করা হচ্ছে।


বাগাচারা গ্রামের কৃষক মুনছুর রহমান বলেন, "বিগত বছরগুলোতে পুরনো পদ্ধতিতে চাষাবাদে প্রতিবিঘাতে খরচ হতো ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা। তবে প্রকল্পের আওতায় সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় এবছর খরচ পড়ছে মাত্র ৫ হাজার টাকা। এতে সাশ্রয় হবে দেড় লাখ টাকা।"


অপর কৃষক রফিকুল হোসেন জানান, প্রকল্পের আওতায় বীজ, চারা এবং সার সরবরাহ করা হচ্ছে, ফলে তাদের খরচ অনেক কমেছে। এছাড়া তারা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শিখছেন এবং আশপাশের কৃষকরা এসে দেখছেন কিভাবে চারা তৈরি ও ধান রোপন হচ্ছে।


রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের চালক আরশাদ হোসেন বলেন, "মেশিনের মাধ্যমে এক বিঘা জমি রোপন করতে সময় লাগে মাত্র ৪০ মিনিট এবং খরচ হয় ৫০০ টাকা, যা শ্রমিক দ্বারা রোপন করতে ৩ হাজার টাকা এবং পুরোদিন সময় লাগত।"


এদিকে, মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, "এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকরা একই সময়ে একই জাতের ফসল উৎপাদন করতে পারবেন, ফলে রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণ এবং একযোগভাবে কাজ করা সহজ হবে।"


চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর, পত্নীতলা এবং ধামইরহাট উপজেলায় ৪৫০ বিঘা জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। এতে এক মৌসুমে কৃষকদের সাশ্রয় হবে অন্তত ৫০ লাখ টাকা। কৃষকদের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং লাভবান হতে সাহায্য করবে।