যেভাবে গৃহকর্মীকে পাশবিক নির্যাতন করতেন জিনাত

নিজস্ব প্রতিবেদক
সামির আসাফ, প্রতিনিধি ( ঢাকা )
প্রকাশিত: রবিবার ২০শে অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০৩ অপরাহ্ন
যেভাবে গৃহকর্মীকে পাশবিক নির্যাতন করতেন জিনাত

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় ১৩ বছর বয়সী গৃহকর্মী কল্পনাকে নির্মমভাবে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত জিনাত জাহান আদরকে আদালত রিমান্ডে পাঠিয়েছে। রোববার (২০ অক্টোবর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক মো. ওবাদুর রহমান রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।


শনিবার দুপুরে কল্পনাকে উদ্ধার করে ভাটারা থানা পুলিশ। অভিযুক্ত জিনাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। জানা গেছে, চার বছরেরও বেশি সময় ধরে কল্পনাকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তাকে খাবার না দিয়ে এবং বিনা কারণে মারধর করে অমানুষিক অবস্থায় রাখা হয়েছে। নির্যাতনের কারণে কল্পনার পা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং তার সামনে চারটি দাঁতও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, তার হাত পুড়িয়ে দেওয়ার মতো পাশবিক কাজও করা হয়েছে।


প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, জিনাত জাহান আদর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন এবং বর্তমানে কোনো কাজ করেন না। তাদের মতে, জিনাতের পরিবার বা বন্ধুরা এই নির্যাতনের ব্যাপারে কিছুই জানত না।


ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ মাজাহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, শিশুটির পরিবারের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজে কল্পনাকে দেখতে গিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এই ঘটনাকে উদ্বেগজনক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, "এই নির্মম আচরণ মানবাধিকারের লঙ্ঘন। গৃহকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বর্তমানে উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে।"


ড. কামাল আরও জানান, গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশন গৃহকর্মী নির্যাতনবিরোধী আইন একটি খসড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। তিনি হাসপাতালে গিয়ে কল্পনার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।


এই ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, এবং বিষয়টি নিয়ে সামাজিক গণমাধ্যমে আলোচনা চলছে। গৃহকর্মীদের জন্য আরও সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি উঠছে।