বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত জ্বালানি বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় জানান, এখন থেকে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের কাজ সরাসরি সরকারের হাতে থাকবে না। বরং গণশুনানির মাধ্যমে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণ ও মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে, যা দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে বলে মনে করেন তিনি।
বিইআরসির মাধ্যমে দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফাওজুল কবির জানান, আগের সরকার জ্বালানি নিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাদের গ্যাস অনুসন্ধানে তেমন আগ্রহ ছিল না, বরং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করতে তারা জরুরি চাহিদা ও পরিস্থিতির অজুহাত দেখিয়েছে। এই কারণে গ্যাসের সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনায় যে দুর্বলতা তৈরি হয়েছে, তা বর্তমান সরকারের নীতিগত সংস্কারের অন্যতম কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়েও ফাওজুল কবির তার মতামত দেন। তিনি বলেন, যদি কেউ নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে আগ্রহী হয়, তবে সরকার এতে বাধা দেবে না। তবে বিদ্যুৎ বিক্রির ক্ষেত্রে দরপত্রের মাধ্যমে আসতে হবে। এটা বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করবে বলে তার আশা।
এছাড়া, চলমান বিভিন্ন আন্দোলন ও দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে জ্বালানি উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করছে। এ অবস্থায় সবার দাবি পূরণ করা সম্ভব নয়, এবং সব দাবি মেনে নেওয়া সরকারের জন্য যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং হবে। তিনি সমালোচনা করে বলেন, “এটা ধান কাটার মৌসুমের মতোই দাবি-দাওয়ার মৌসুম চলছে, কিন্তু সবার সব দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।”
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এ ধরনের সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দিকে এগোচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।