ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে দীর্ঘদিনের যুদ্ধ এবং ধ্বংসের পর আরও ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যার ফলে গাজার চলমান মানবিক সংকটে নিহতের সংখ্যা ৪৮ হাজার ২৭০ জন ছাড়িয়ে গেছে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে এই মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়, যেখানে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এই ৬ জনের লাশ উদ্ধারের পরই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ২৭১ জনে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ চাপা পড়ে আছেন, তবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় আরও ৫ জন আহত হয়েছেন, যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর ফলে ইসরায়েলি আক্রমণে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৬৯৩ জনে পৌঁছেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, ধ্বংসের পরিণতি এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি স্থাপনের প্রস্তাব দিলেও ইসরায়েল তার আক্রমণ অব্যাহত রাখে।
এদিকে, তিন-পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় বন্দি বিনিময়ের পাশাপাশি স্থায়ী শান্তি, যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে প্রত্যাহারের লক্ষ্য রাখা হয়েছে। কিন্তু এই চুক্তির কার্যকর হওয়ার পরও প্রাণহানি থামছে না।
গাজার আক্রমণে বিধ্বস্ত হওয়া প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বর্তমানে বাস্তুচ্যুত। এছাড়া, গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে, যা পুনর্নির্মাণে আরও অনেক বছর লেগে যাবে।
গাজার এই ভয়াবহ সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে গণহত্যার জন্য। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল ইতোমধ্যেই গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। মানবিক সহায়তা ও পুনর্নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় পদক্ষেপ প্রয়োজন।
এদিকে, গাজার অধিকারিকরা আশাবাদী যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মানুষদের উদ্ধারে আরও সময় লাগবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।