মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের মুসলিমবাগ আবাসিক এলাকার প্রধান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। কালিঘাট রোড থেকে গাংপার ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে, ফলে প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি, যা দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন পড়ে থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি এলজিইডির আওতায় ২০১১ সালে পাকা করা হয়েছিল, তবে এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। বর্তমানে রাস্তার পিচ ও ইট-খোয়া উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষার সময় সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়, ফলে যানবাহন চলাচল বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। সাধারণ রিকশা-টমটমচালকরাও এই পথে যেতে চায় না, অনেক সময় যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম জানান, এ সড়ক দিয়েই গর্ভবতী নারী ও অসুস্থদের হাসপাতালে নিতে হয়, যা চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় শিক্ষক শামিম মিয়া বলেন, চার বছর ধরে কোনো সংস্কার না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াত কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, শহরের দোকানে যেতে অনেক দেরি হয়, কারণ যানবাহন চালকরাও এই রাস্তায় যেতে চায় না।
এলাকাবাসী জানান, রাস্তার সংকীর্ণতা এবং বেহাল দশার কারণে প্রতিদিনই যানবাহন উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এক টমটম চালক বলেন, আগে যেখানে প্রতিদিন হাজার টাকা আয় হতো, এখন তা তিনশো থেকে চারশো টাকায় নেমে এসেছে, কারণ গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে এবং যাত্রীরাও ঝুঁকি নিতে চায় না।
এলাকার মাদরাসার শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, আশপাশের অন্যান্য সড়ক উন্নত হলেও মুসলিমবাগ সড়কটি বছরের পর বছর অবহেলিত। পথচারী রঞ্জন দেবনাথ জানান, ১২ বছর আগে পাকা করার পর আর কেউ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি, ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ বিষয়ে এলজিইডির শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন খান জানান, মুসলিমবাগ সড়ক সংস্কার প্রকল্পের প্রস্তাবনা আগেই পাঠানো হয়েছে, তবে সরকারের পরিবর্তনের কারণে তা আটকে আছে। তিনি দ্রুত সংস্কারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, রাস্তাটির দুরবস্থার বিষয়ে তিনি অবগত নন, তবে দ্রুত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেবেন। এলাকাবাসী দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, বর্ষার আগেই রাস্তা মেরামত না হলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।