প্রকাশ: ৪ মে ২০২৫, ১৯:৩৮
সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স নতুন রেকর্ড গড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যমতে, এপ্রিল মাসে দেশে ২৭৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৩ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ। এটি একক মাসে রেমিট্যান্স আয়ের দিক থেকে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এপ্রিলে প্রতিদিন গড়ে ৯ কোটি ১৭ লাখ ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি। এর মাধ্যমে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহে যে ইতিবাচক গতি সৃষ্টি হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯১২ কোটি ডলার। ফলে এবারের প্রবৃদ্ধি ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এমনকি পুরো আগের অর্থবছরের তুলনায়ও এবার ১০ মাসেই বেশি অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার এবং ডিসেম্বরে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বছরের শেষ পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন রেকর্ড হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
শুধু রেমিট্যান্সই নয়, রপ্তানি আয়েও দেখা গেছে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি। এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি আয়ে ১১ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যা সামগ্রিক বৈদেশিক আয়ের চিত্রকে আরও দৃঢ় করেছে। এর ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দীর্ঘদিন পর ২২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ফিরে এসেছে।
গত ৩০ এপ্রিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ২২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত ২০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বশেষ ২০২৩ সালের আগস্টে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার, এরপর ধীরে ধীরে কমে যাওয়া রিজার্ভ ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
রিজার্ভ ও রেমিট্যান্সে এমন ইতিবাচক গতি দেশীয় অর্থনীতিতে প্রবাসীদের আস্থা ও সরকারের নীতিনির্ধারণী সাফল্যের প্রমাণ দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চলমান বৈদেশিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও এই প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।