নুরুজ্জমান কাফির বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে স্ট্যাটাস দেন কাফি। তিনি দাবি করেন, এটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে এবং দায়ীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান। কাফির বাবা মাওলানা এবিএম হাবিবুর রহমান জানান, আগুনে তাদের সব কিছু পুড়ে গেছে এবং এটি তাদের পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনার অংশ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করার দাবি জানান।
অগ্নিকাণ্ডের পর কাফি সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দেন এবং ফেসবুকে লেখেন, বেলা ১১টায় কলাপাড়া থানায় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান। তিনি এ ঘটনাকে সরকারের দায়িত্বহীনতার ফল বলে উল্লেখ করেন এবং হুঁশিয়ারি দেন যে, তার বক্তব্য মানা না হলে তিনি নিজেই বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তার এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. ইলিয়াস হোসাইন জানান, রাত সোয়া ২টার দিকে কাফির বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। পৌঁছে দেখতে পান আগুন সিলিং পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। পাশের গোয়ালঘর রক্ষা করা গেছে এবং বাড়ির কেউ হতাহত হননি বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
স্থানীয়দের মধ্যে এ ঘটনা নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়েছে। কেউ বলছেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা, আবার কেউ ধারণা করছেন, কাফির বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু নিয়ে করা ভিডিওর কারণে কোনো মহল ইচ্ছাকৃতভাবে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
কাফির গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায়। ২০১৯ সাল থেকে তিনি কনটেন্ট তৈরি শুরু করেন এবং বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় সমাজের বিভিন্ন অসংগতি, দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও বানিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার ভিডিওগুলোর জন্য একাধিকবার সমালোচনার মুখেও পড়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় কাফির সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অনেকে এ ঘটনাকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন এবং দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি তুলছেন। অন্যদিকে কিছু মহল তার বক্তব্য ও কার্যক্রমের সমালোচনা করছে এবং ঘটনাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
প্রশাসন এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আশেপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছে। এখনো পর্যন্ত কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়নি, তবে দায়ীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে কাফি ও তার পরিবার আপাতত নিরাপদে থাকলেও তারা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, তদন্তের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।