মেডিকেল আসন নয়, সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশেষ প্রতিবেদক - স্বাস্থ্য বিভাগ
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৭ই জানুয়ারী ২০২৫ ১২:৩৮ অপরাহ্ন
মেডিকেল আসন নয়, সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে সরকার

সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর আসন সংখ্যা না বাড়িয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। শুক্রবার সকালে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল কলেজ কেন্দ্রে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা পরিদর্শন শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজে আসন বাড়ানোর পরিবর্তে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ এবং প্রয়োজনে কলেজগুলোর মধ্যে সমন্বয় করার কথা ভাবা হচ্ছে। 


আজ সকাল ১০টায় দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। দেশের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে শুরু হওয়া এই পরীক্ষা চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবার বেশ তীব্র। এক লাখ ৩৫ হাজার ২৬১ জন পরীক্ষার্থী মাত্র পাঁচ হাজার ৩৮০টি আসনের জন্য লড়াই করছে, অর্থাৎ প্রতি আসনে প্রতিযোগিতা করছেন ২৫ জন।


স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে মোট ১১০টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ৩৭টি, বেসরকারি ৬৭টি, একটি আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ এবং পাঁচটি বেসরকারি আর্মি মেডিকেল কলেজ। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত আরও সঠিক করার লক্ষ্যে সরকার নতুন শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।


স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, মেডিকেল শিক্ষার মান ধরে রাখতে শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়ানো এবং উন্নত শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। তাই, আসন সংখ্যা বাড়ানোর পরিবর্তে বিদ্যমান অবকাঠামোর উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া হবে। পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত পরীক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য সেবায় অবদান রাখার স্বপ্ন নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 


এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রতিযোগিতা প্রতিবছর বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এবার আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। যদিও আসন সংখ্যা সীমিত, তবুও শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস এবং প্রস্তুতি ছিল উল্লেখ করার মতো। পরীক্ষার সময় কেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।


সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দিকেও ঝুঁকছে। তবে সেগুলোর টিউশন ফি তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সরকারের উচিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের টিউশন ফি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং শিক্ষার মান উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট নীতি গ্রহণ করা।


মেডিকেল শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ ডাক্তারদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। শিক্ষার্থীরা আশা করছে, সরকারের এই পরিকল্পনা শিক্ষার গুণগত মান বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য খাতে আরও দক্ষ কর্মী তৈরি করবে।