ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনে গুলির স্প্লিন্টারে চোখ হারানো পটুয়াখালীর যুবক সাইদুল ইসলামের জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছে ঢাকার কয়েকজন হৃদয়বান ব্যক্তি। তার জন্য উপহার হিসেবে একটি ব্যাটারি চালিত রিকশা তুলে দিয়েছেন তারা, যা দিয়ে তিনি নতুন করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করতে পারবেন।
রবিবার দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে একটি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রিকশাটি সাইদুলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং দি ডেইলি স্টারের স্থানীয় প্রতিনিধি।
সাইদুল জানান, ঢাকায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও আন্দোলনে গুরুতর আহত হওয়ার পর স্ত্রী ও সন্তান তাকে ছেড়ে চলে যান। এরপর পৈতৃক ভিটা বাঁশবাড়িয়া গ্রামে ফিরে আসেন। অভাব-অনটনে কাটছিল দিন। তার এই বিপর্যস্ত জীবন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ঢাকার এক হৃদয়বান ব্যক্তি তার সহায়তায় এগিয়ে আসেন।
সাইদুল বলেন, "এই রিকশা পেয়ে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। যারা আমার এই দুঃসময়ে সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি আমি আজীবন কৃতজ্ঞ। এটাই প্রমাণ করে মানবতা আজও টিকে আছে।"
সাইদুল বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। আর্থিক অনটনের কারণে বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি। ঢাকায় গিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে আন্দোলনের সময় গুলির আঘাতে তার বাম চোখ হারিয়ে যায়।
ঘটনার দিন যাত্রাবাড়ীতে আহত সাইদুলকে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার পর তার চোখ ও শরীর থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে আরও এক সপ্তাহ চিকিৎসা নেন।
তার জীবনের কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ানো মানুষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাইদুল। রিকশাটি এখন তার জীবিকার নতুন পথ দেখিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।