কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্থানীয় জামায়াত কর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু। রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি নিজ এলাকা ছেড়ে ফেনীতে ছেলের কাছে চলে যান বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মোবাইল ফোনে আব্দুল হাই জানান, মারধরের কারণে ফেনীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে তিনি নিজ গ্রামে ফিরতে চান।
গতকাল দুপুরে ওষুধ কেনার জন্য বাজারে গেলে স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন ব্যক্তি তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে অপমান করেন। এরপর তাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী রেহানা বেগম বলেন, "এই ঘটনায় আমার স্বামী অত্যন্ত মানসিক কষ্ট পেয়েছেন। তার আত্মসম্মানে আঘাত লেগেছে। তাই তিনি এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।"
বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে গোলাম মোস্তফা বলেন, "আমার বাবাকে যারা লাঞ্ছিত করেছে, তারা জামায়াত ও শিবিরের পরিচিত কর্মী। তাদের মধ্যে কয়েকজনের নামও আমরা জানি। এভাবে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা অত্যন্ত দুঃখজনক।"
অন্যদিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. মাহফুজুর রহমান দাবি করেন, "ঘটনার সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অভিযুক্ত আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ নন। তবে তিনি সমর্থক হতে পারেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এ টি এম আক্তার উজ জামান বলেন, "ভিডিও দেখে আমি দুইবার ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি কোনো অভিযোগ করতে রাজি হননি। তবে আমরা অভিযুক্তদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহের চেষ্টা করছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এই ঘটনার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষায় প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন তারা।
ইনিউজ৭১-এর পাঠকরা বিষয়টির সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।