শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবীতে মাববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩রা অক্টোবর ২০২৪ ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবীতে মাববন্ধন

কুমিল্লার দেবীদ্বারে ১২ বছরের এক শিশুকে বাসায় কাজ দেয়ার কথা বলে নিয়ে ধর্ষনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামী ধর্ষক ও সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবীতে ‘ভূমিহীন সংগঠন’ রসুলপুর শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।


বুধবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার রসুলপুর বাজারে ভূমিহীন সংগঠনের উদ্যোগে ওই মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় ‘আগামী তিন দিনের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করতে না পারলে আরও বড় ধরনের কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দেন নিজেরা করি সংস্থা ও ভুমিহীন সংগঠন।


মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় ভূমিহীন সংগঠনের ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ফজর আলী মেম্বার এর সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ‘নিজেরা করি সংস্থা’র বিভাগীয় সমন্বয়ক খাইরুল ইসলাম, আঞ্চলিক সমন্বয়ক আব্দুল জব্বার, ভিক্টিমের বড় বোন, খালু আবু কালাম, ভুমিহীন সংগঠনের নেতা আব্দুল আজিজ, আবু হানিফ, কুলসুম বেগম প্রমূখ।


উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর পিতৃহারা ও বাক প্রতিবন্দী ভিক্ষুক মাতার ১২ বছরের এক শিশুকণ্যাকে গৃহকর্মী হিসেবে মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতন দেয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে যায় ২ নারী দালাল। উপজেলার রসুলপুর গ্রামের নাছিমা আক্তার(২৬) ও ফরিদা আক্তার(২৭) নামে দুই দালাল ঢাকা বিমান বন্দর এলাকায় এক বাসায় তাকে নিয়ে উঠে। ওখানে ওই গৃহকর্তা শিশুটিকে একটি কক্ষে আটক রেখে টানা ৩ দিন ধর্ষণ করে।


এসময় ২ দালাল নাছিমা আক্তার ও ফরিদা আক্তার ওই একই বাসায় ছিলেন। শিশুটি খুব বেশী অসুস্থ্য হয়ে গেলে তাকে নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর বাড়িতে চলে আসে। শিশুটিকে কোরআন শপথ করে বলা হয়েছিল এ ঘটনা যেন কাউকে না বলা হয়। বললে তার ক্ষতি হবে। শিশুটির রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় এবং বেশী অসুস্থ্য হয়ে গেলে তার নানীর জিজ্ঞাসাবাদে সে সত্য প্রকাশ করে। শিশুর নানী ভিক্টিমকে নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর বেসরকারী সংগঠন ‘নিজেরা করি সংস্থা’র রসুলপুর কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করলে ওই সংস্থার ২ জন নারী সংগঠক তাকে থানায় নিয়ে আসেন।


২৪ সেপ্টেম্বর ভিক্টিমের খালা বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় রসুলপুর গ্রামের নারী দালাল নাছিমা আক্তার(২৬) ও ফরিদা আক্তার(২৭) এবং অজ্ঞাত ধর্ষককে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নারী দালাল নাছিমা আক্তারকে আটক করে কুমিল্লা কোর্ট হাজতে চালান করা হয়। অপর দিকে ভিক্টিমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয়।


এ ব্যাপারে শিশু ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মো. মুক্তার বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই এক নারী দালালকে গ্রেফতার করেছি। মামলায় ধর্ষকের নাম পরিচয় নেই, পলাতক অপর নারী দালাল ফরিদা আক্তারকে আটক করার চেষ্টা করছি। তাকে পেলেই ধর্ষকের ঠিকানা খুঁজে পাব। আটক নাছিমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত এক দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছে এবং আদালত প্রাঙ্গনে জিআরও’র কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।