কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ঘটে যাওয়া একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সারা দেশ জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এক যুবকের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করার পর সেই কব্জি নিয়ে পালানোর দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়। এই ঘটনার পর পুলিশসহ সাধারণ মানুষও ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার দুপুরে দাউদকান্দি বাজারের একটি ব্যস্ত রাস্তার ওপর এ ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারী আকস্মিকভাবে ওই যুবকের ওপর আক্রমণ চালিয়ে তার হাতের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এরপর, হত্যাকারী রক্তাক্ত কব্জিটি হাতে নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যায়। বাজারের লোকজন এই ঘটনায় হতবাক হয়ে গেলেও, ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবক এবং খুনী দু'জনই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ জানান, "নিহত যুবক ও অভিযুক্ত খুনী উভয়ই বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল। ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তাদের নাম রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই অপরাধমূলক জগতে লেনদেন বা প্রতিহিংসার কারণে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।"
সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে এবং খুনীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। দাউদকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, "আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি এবং অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য এলাকাজুড়ে অভিযান চালাচ্ছি। আশা করছি, শিগগিরই আমরা তাকে আটক করতে সক্ষম হবো।"
এই বিভৎস হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ভয় ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, এমন প্রকাশ্য ও নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, "আমরা আমাদের জীবনে কখনও এমন ঘটনা দেখিনি। এটা আমাদের সবাইকে ভীত করে তুলেছে।"
এই ঘটনার পর কুমিল্লার দাউদকান্দিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা কামনা করেছে এবং এলাকার সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছে।
এদিকে, নিহত যুবকের পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। তারা জানিয়েছেন, "আমরা আমাদের ছেলেকে হারিয়েছি। আমরা চাই, যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা যেন কঠোর শাস্তি পায়।"
সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া এই নৃশংস দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা সারা দেশে নিন্দার ঝড় তুলেছে। মানুষজন এই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।
এই হত্যাকাণ্ড আবারও বাংলাদেশের অপরাধজগতে থাকা সংঘর্ষ ও সহিংসতার বাস্তবতা তুলে ধরেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সবাই এখন চোখ রাখছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।