মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হতে পারছেন না বরিশালের সাব্বির

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: বুধবার ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হতে পারছেন না বরিশালের সাব্বির

চরম দারিদ্র্যেও দমে না যাওয়া বরিশালের উজিরপুরের রমজান খান সাব্বির পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েও অর্থাভাবে ভর্তি হতে পারছে না। কৃষক বাবার ছেলে সাব্বির অসাধ্য সাধন করলেও মেডিকেলে ভর্তির প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন টাকা। ভর্তির জন্য ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন তার দরিদ্র বাবা। এর আগে টাকার অভাবে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় বই কিনতে পারেননি তিনি। তবে বোনের উপহার পাওয়া ডিজিটাল শুমারি ট্যাব দিয়ে অনলাইনে পড়াশোনা করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সাফল্য পেয়েছেন এ মেধাবী তরুণ। সাব্বির উপজেলার শোলক ইউনিয়নের পাশের দামোদরকাঠি গ্রামের কৃষক ফিরোজ খানের ছেলে।




সাব্বির জানান, ভর্তি পরীক্ষায় ৬৭.৭৫ নম্বর পেয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন। কোনো প্রাইভেট পড়ার মতো সুযোগ ছিল না। অনলাইন ও ইউটিউব থেকে টিউশন নিয়ে অংশ নিয়েছেন ভর্তি পরীক্ষায়। নবম শ্রেণিতে যখন বিজ্ঞান বিষয় নেন তখন থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি।


সাব্বির আরও বলেন, বাবা সব সময় বলছেন যত কষ্ট হোক স্বপ্নপূরণে সব ধরনের সহায়তা করবেন। বাবার এ আশ্বাসে চিকিৎসক পেশাকে নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করি। সেই লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসাবে উজিরপুরের এইচএম ইনস্টিটিউট থেকে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। পরে সরকারি গৌরনদী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ ৫ অর্জন করি। 

ফিরোজ খান জানান, কীভাবে ছেলেকে ভর্তি করব আর পড়ালেখার খরচ বহন নিয়েও চিন্তায় রয়েছি। ঋণ করে ভর্তির চেষ্টা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।


সাব্বিরের মা সাহিদা বেগম জানান, স্বামী কৃষিকাজের পাশাপাশি যখন টাকা থাকে তখন গামছার ব্যবসা করেন। এ দিয়ে চলতে কষ্ট হয়। ছেলেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে মেডিকেলে ভর্তি করা নিয়ে চিন্তায় আছি। সবার কাছে দোয়াও চেয়েছেন সাব্বিরের মা।


প্রতিবেশী বুলবুল মিয়া বলেন, প্রতি মাসে মেডিকেল পড়ুয়া সন্তানের জন্য ব্যয় সর্বনিু ১০ হাজার টাকা। মাসে এত টাকা ব্যয়ের সামর্থ্য সাব্বিরের পরিবারের নেই। তাই সাব্বিরের জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।


উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সাব্বিরকে আমার কার্যালয়ে আসতে খবর দিয়েছি। তাকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাছাড়া ব্যক্তিগতভাবে সাব্বিরের পাশে থাকবেন বলে জানান ইউএনও।