ইউপি নির্বাচনে ভোট কেনা ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৪ই জুলাই ২০২৩ ০৮:১২ অপরাহ্ন
ইউপি নির্বাচনে ভোট কেনা ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা!

আগামী ১৭ জুলাই টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার চার ইউপিতে নির্বাচন। নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে তাদের সমর্থকরা নিজ নিজ এলাকায় রাত জেগে ভোট পাহারা দিচ্ছেন। ভোট কেনাবেচা ঠেকাতে তারা এ পথ বেছে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। প্রার্থীরা ভোটারদের পক্ষে নিতে রাতেই এমন কাজটা করতে পারেন- এমন আশঙ্কা থেকেই নিজ উদ্যোগে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন তারা।


প্রায় প্রতিটি গ্রামে চলছে এই পাহারা। সন্ধ্যার পর থেকেই নিজ নিজ প্রার্থীর সমর্থকরা তাদের এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দল বেঁধে পাহারা দিতে থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত। একই সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়েও টহল দিতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। অপরিচিত কাউকে দেখলে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে সে কার সমর্থক। কোনো কোনো ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোন দিকে যাচ্ছেন তাকেও অনুসরণ করে তার পিছু নিচ্ছেন।


রাত জেগে ভোট পাহারা দেয়া হচ্ছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রার্থীদের সমর্থকরা বলেন, ভোটের আর মাত্র দুই দিন বাকি। তাই শেষ মুহুর্তে কেউ যেন তাদের পক্ষের ভোটারদের টাকার লোভ বা ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বার্থ উদ্ধার করতে না পারে সে জন্যই এ পাহারা। 


নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চার ইউনিয়নে ৩৬টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটার রয়েছে ৭৫ হাজার ৮৩৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৩৮ হাজার ১৩৭ জন এবং পুরুষ ভোটার ৩৭ হাজার ৭০২ জন। চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৭২ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ১৪৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 


আলাউদ্দিন মিয়া নামে বড়চওনা গ্রামের এক ভোটার বলেন, ‘একজন প্রার্থীর লোক এসে আমার হাতে এক হাজার টাকার একটি নোট গুঁজে দিয়ে তার প্রার্থীকে ভোট দিতে বলেছিলেন। আমি সেই টাকা নিইনি। টাকার বিনিময়ে নিজের বিবেক বিক্রি করব না।’ অনেক প্রার্থীই ভোটারদের প্রকাশ্যে টাকা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তার।


একাধিক চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোট কেনাবেচা ঠেকাতে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা পাহারা বসিয়েছেন। ভিন্ন ভিন্ন দলে ভাগ হয়ে তাঁরা গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকছেন। ভোটের আগের রাত পর্যন্ত এ পাহারা চলবে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একজন মেম্বার প্রার্থী বলেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভোট কেনার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় ওই প্রার্থীর লোকজন টাকা পয়সা নিয়ে রাতের বেলায় ঘোরাঘুরি করছেন। আমার কর্মী সমর্থকেরাও ভোট বেচাকেনা ঠেকাতে গ্রামে গ্রামে পাহারা দিচ্ছেন।’


কালিয়া ঘোনারচালা গ্রামের শাহ আলম বলেন, ‘চোর-ডাকাত ঠেকাতে মানুষ রাতে পাহারা দেন। আমরা চোর-ডাকাত নয়, ভোট বেচাকেনা ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। রাত জাগা কষ্টকর হলেও নির্বাচনের আগের রাত পর্যন্ত এ পাহারা চলবে।’


উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউল হক বলেন, নির্বাচনে কারো বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।