হিলিতে গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা এলাকাবাসীর দাবি হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: শনিবার ১লা এপ্রিল ২০২৩ ০৩:১৮ অপরাহ্ন
হিলিতে গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা এলাকাবাসীর দাবি হত্যা

দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর হিলি পৌরসভার চন্ডিপুর এলাকায় দিনের বেলায় নিজ শয়ন কক্ষে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে রিংকি (১১) নামের এক কিশোরী মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে এলাকাবাসীর দাবি কে বা কাহারা তাকে হত্যা করে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অন্য দিকে পুলিশ বলছে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হতে পেলে বুঝা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা। 


শনিবার (০১ এপ্রিল) সকাল এগারোটায় হাকিমপুর হিলি পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড চন্ডিপুর এলাকায় (ডলি মেমোরিয়াল স্কুল) এর পূর্ব পার্শ্বে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আত্মহত্যাকারী কিশোরী রিংকি (১১) চন্ডিপুর এলাকার আব্দুর রশিদ এর মেয়ে। বাবা আব্দুর রশিদ ঢাকা শহরে শ্রমিকের কাজ করে।


প্রতিবেশী ও হাকিমপুর হিলি পৌর আ'লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল হোসেন জানান, মেয়েটি খুবই শান্তশিষ্ট ছিলো। তার বাবা মা গরীব মনুষ। বাবা ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করে। মা এখানে দুই তিন জনের বাড়িতে আয়ার কাজ করে। আজ সকালে ওরা তিন চার সহপাঠী মিলে বাড়ির পার্শে খেলা করতে ছিলো এরপর দুই জন বাড়িতে ভাত খেতে যায়। কিছুক্ষণ পরে তার এক সহপাঠী এসে দেখে রিংকির শয়ন ঘরের দরজা এমনিতে লাগানো আছে। হাত দিয়ে আস্তে করে দরজা সড়িয়ে দিলে খাটের উপরে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে রিংকির মরদেহ ঝুলিয়ে আছে দেখতে পায়। এমন দৃশ্য দেখে সে চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা ঘটনা স্হলে চলে আসে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনা স্হলে এসে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যায়।


তিনি আরও জানান, আমার জানা মতে তার মা বাবার প্রতিবেশী কারো সাথে কোন শত্রুতা বা ঝামেলা নাই। তবে আমার ধারণা বাড়ি ফাঁকা পেয়ে কে বা কাহারা কিশোরীর সাথে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কাজ করতে চাইলে সে চিৎকার করে তখন তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তার শয়ন কক্ষে ঝলানো মরদেহটি খাটের সাথে পা লেগে ছিলো। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে পরিস্কার করে বলে যাবে হত্যা না কি আত্মহত্যা। রিংকি পবিত্র মাহে রমজান মাসের নিয়মিত রোজা করছে এবং আজকেও সে রোজা ছিলো বলে জানান তিনি। 


রিংকির মা মোসলে বেগম বলেন, আমার স্বামী ঢাকায় কাজ করে। আমি প্রতি দিনের ন্যায় আজ সকালে মেয়েকে বাড়িতে রেখে পার্শ্ববর্তী অন্যর বাসায় কাজ করতে যাই। পরে হঠাৎ লোকজনের চিল্লাচিল্লি শুনতে পেয়ে বাহিরে আসি এবং দেখি লোকজন সব আমার দিকে দৌড়াচ্ছে। আমি বাড়িতে এসে দেখি আমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে আছে। আমার মেয়ের সাথে আমার রাগারাগি বা মান অভিমান এরকম কোন ঘটনাও ঘটে নাই। আমি মেনে নিতে পারছি না এমনটা কিভাবে সম্ভব।


বিষয়টি নিশ্চিত করে হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আবু সায়েম মিয়া জানান, আমরা স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে ঘটনা স্হলে প্রাথমিকভাবে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশটি থানায় নিয়ে আসি। পরে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


তিনি আরো জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে কোন কিছু বলতে পারছি। কিশোরীর শরীরে সে কোন কিছু চিহ্ন দেখতে পাই নাই। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসলেই বোঝা যাবে আসলে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা।