গৃহবধু হত্যা; থানায় মামলা না নেয়ায় ৩দিন পর আদালতে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: সোমবার ১৬ই জানুয়ারী ২০২৩ ০৮:০৯ অপরাহ্ন
গৃহবধু হত্যা; থানায় মামলা না নেয়ায় ৩দিন পর আদালতে মামলা

কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানাস্থ কাপ্তানবাজার এলাকার এক গৃহবধূকে শ্বশুর বাড়িতে যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনাকে স্বামীর পরিবার বলছে আত্মহত্যা।


নিহত শান্তা আক্তার(২৩) দেবীদ্বার উপজেলার ৪ নং সুবিল ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের রুক্কু মিয়ার ও রানুয়ারা বেগমের কণ্যা। ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা কাপ্তান বাজার এলাকার শুভ মিয়ার পুত্র মো. সাজ্জাদুর রহমান শাওনের সাথে ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরানায় তার বিয়ে হয়।


ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারী) দুপুর ১টায়, ওই ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করলেও। কুমিল্লা কোতয়ালী থানা এবং দেবীদ্বার থানায় মামলা না নেয়ায় অবশেষে ঘটনার ৩ দিন পর সোমবার দুপুরে ভিক্টিমের মা রানুয়ারা বেগম(৪২) বাদী হয়ে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ১ নং ট্রাইবুনাল আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন’র আদালতে ভিক্টিম শান্তা আক্তারের স্বামী-সাজ্জাদুর রহমান শাওন(৩০), শ্বশুর মো. শুভ মিয়া (৫৫), শ্বাশুরী- ইয়াসমিন বেগম(৫০), চাচা শ্বশুর- মো. জহির(৫২), ননদ- সুমি আক্তার (২৬), কলি আক্তার(২৮), ননস- জলি আক্তার(৩২)সহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন।


স্থানীয় ইউনুছ বাহাদুর বলেন, প্রেমের সম্পর্কে পারিবারিক ভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের কয়েক বছর না যেতেই স্বামী সাজাদ্দুর রহমান শান্তাকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করতো। এ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা করা হয়েছে। ৩টি মামলার মধ্যে দুটি নিষ্পত্তি হলেও বর্তমানে নারী ও শিশু দমন আইনে একটি মামলা চলমান রয়েছে। গত বুধবার (১১জানুয়ারী) শান্তার স্বামী সাজাদ্দুর রহমানের চাচার মৃত্যুর খবর দিয়ে বাড়িতে নিয়ে পরিকল্পিত নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।


স্থানীয় ইসলাম মিয়া মেম্বার বলেন যৌতুকসহ বিভিন্ন দাবীতে ঘাতক স্বামী শান্তাকে মারধর ও নির্যাতন করতো। এ নিয়ে আমরা একাধিক শালিস করি। তবে শান্তার স্বামী সাজাদ্দুর রহমান মাদকাসক্ত ছিল। প্রায়ই মেয়েটাকে নির্যাতন করতো যৌতুকের টাকার জন্য।

 

মামলার বাদী নিহত শান্তার মা রানুয়ারা বেগম বলেন আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে, তার মুখে বিষ ঢেলে খবর দেয় আমার মেয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত চিহ্ন রয়েছে, বাম কানের একাংশ ছেড়া, মাথা থেতলানো ও রক্তাক্তসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত ও রক্তাক্ত ছিল। শান্তার স্বামী সাজাদ্দুর রহমান ব্যবসার নামে ৩ লক্ষ টাকা ধার নেয়, তার পরও আরো টাকা যৌতুক এনে দিতে আমার মেয়েকে প্রায়ই চাঁপাচাপি করতো। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্বামীসহ পরিবারের সবাই মিলে মারধর করত। তিনি আরও জানান হত্যার বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি থানার ওসি।


এ বিষয় কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ সন্জুর মোরশেদ জানান, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলা নিব না এমন কথা আমাদের সাথে হয়নি। বাদী পক্ষ মামলা করলে অবশ্যই তা গ্রহণ করবো।