শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দখিনের মৃৎ শিল্পীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শনিবার ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৫:৫১ অপরাহ্ন
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দখিনের মৃৎ শিল্পীরা

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দখিনের মৃৎ শিল্পীরা। সেইসঙ্গে মন্দিরের সাজসজ্জাসহ সার্বিক কাজও চলছে এগিয়ে। বিভাগের ৬ জেলায় এ বছর ১৭শ’ ৬৬টি মন্ডপে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। গত বছর থেকে এবার মন্ডপগুলোতে আয়োজনের ভিন্নতা থাকার পাশাপাশি জমকাল হবে দুর্গাপূজার আয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন জানিয়েছেন আয়োজক ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা।


এদিকে পূজামন্ডপে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো ধরনের কার্যক্রম হলে কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের। আবার পূজা উদযাপন পরিষদ থেকেও মন্দিরগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


বরিশাল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মানিক মুখার্জী জানান, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্র থেকে পাঠানো ২৬ দফার নির্দেশনা সব মন্দির ও পূজা কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে। এ নির্দেশনা মেনেই সবাইকে পূজা উদযাপন করার অনুরোধ করা হয়েছে। এরইমধ্যে সেচ্ছাসেবক নির্ধারণসহ মন্ডপ ও মন্দিরের আঙিনার নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। 


তিনি জানান, বরিশাল জেলায় এ বছর মোট ৬০০ মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। তার মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে ৪৫টি পূজামন্ডপ রয়েছে। এছাড়া বরিশাল জেলায় নতুন ১১টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার এ বিশ্বাসে সব মিলিয়ে এবারের পূজাতেও কোনো কমতি থাকবে না বলেন তিনি।


বরগুনা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খোকন কর্মকার বলেন, এবার সব মিলিয়ে জেলায় ১৬১টি প্রতিমা গড়া হচ্ছে। জেলার ছয় উপজেলার মধ্য সব থেকে বেশি পূজার আয়োজন করা হচ্ছে পাথরঘাটাতে।


ঝালকাঠির পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অসীম কুমার সাহা জানান, ঝালকাঠি সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৭২টি মন্ডপসহ তাদের গোটা জেলার চার উপজেলায় ১৬৮ মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।


এদিকে বৃহৎ আকারে পূজার আয়োজন হওয়া পিরোজপুর জেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুখরঞ্জন মাস্টার বলেন, জেলার সাত উপজেলায় ৫৩৬টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।  জেলার মধ্যে নাজিরপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এ জেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গোৎসব সুষ্ঠু পরিবেশে সম্পন্ন হবে বলে আশা করি।


অপরদিকে ভোলায় ১১৬টি মন্ডপে এবং পটুয়াখালী জেলায় ১৮৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।


এদিকে পূজা উদযাপন কমিটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম পূজামন্ডপে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো ধরনের কার্যক্রম হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, পূজামন্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার নিশ্চিত করা ও আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনার পাশাপাশি পূজা উদযাপন কমিটিসহ মনোনয়নকৃত ভলান্টিয়ারদের সজাগ থাকতে হবে এবং আমাদের মোতায়েনকৃত পুলিশসহ অন্যান্য শৃঙ্খলা বাহিনীকে আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।


বিএমপি কমিশনার বলেন, সাদা পোশাকে আমাদের পুলিশি টহল থাকবে। এছাড়া র‌্যাব-আনসার বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থা নিয়োজিত থাকবে, তবে কোথাও কোনো ব্যত্যয় ঘটলে আমাদের অবগত করবেন। যত বেশি আপনারা তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন তত বেশি নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।


এদিকে গোটা বিভাগজুড়ে পূজার সময় নিজ নিজ জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছে রেঞ্জ পুলিশ। পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে যেকোনো ধরনের তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সকলকে আহ্বান জানানো হয়েছে।