২০ হাজারের খাসি, চামড়ার দাম ৩০ টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ১০ই জুলাই ২০২২ ০৬:০৪ অপরাহ্ন
২০ হাজারের খাসি, চামড়ার দাম ৩০ টাকা!

সকালে যে পশুর চামড়া এক হাজার টাকা দরে কিনেছেন ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিকেলে সেই চামড়ার দাম নেমে এসেছে ৬০০ টাকায়। কেনা চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে দামের পতন দেখতে পাচ্ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কোরবানি পশুর চামড়ার দাম কমতে শুরু করেছে বগুড়া শহরে।


আড়তে দাম কম- খবরে এলাকায় কমে গেছে চামড়ার খুচরা মূল্য।


কোরবানিদাতারা আশা অনুযায়ী দাম পাচ্ছে না অভিযোগ। বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেলা ১১টার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা তাদের লোকজন নিয়ে চামড়া কিনতে বসেন। শহরতলী ও গ্রামাঞ্চল থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা চামড়া বিক্রি করতে এলেই তাদের পরিবহন (ভ্যান ও ভটভটি) আটকিয়ে দেওয়া হয়। দরদাম করতে গিয়ে আড়তদারের লোকজন এতোটাই কম দাম বলছেন- যে আসল টাকাই উঠবে না ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের।


দুপুর ১টার দিকে শহরের নামাজগড় মোড়ে এক মৌসুমি ব্যবসায়ীর ভ্যান আটকায় আড়তদারের লোকজন। আজিজুল হক নামের ওই ব্যবসায়ীর কাছে থাকা পাঁচটি চামড়ার গড় দাম দেওয়া হয় ৬০০ টাকা করে। আজিজুল জানান, এলাকা থেকে চামড়া কিনে ভ্যান ভাড়া দিয়ে বাজারে নেওয়া পর্যন্ত তার গড়ে দাম পড়েছে ৭২৫ টাকা করে। আর বাজারে সেই চামড়া ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে হলো।


মহাস্থান এলাকা থেকে চামড়া বিক্রি করতে আসা মামুনুর রশিদ নামের এক মৌসুমি ব্যবসায়ীর ভটভটি থানা মোড় এলাকায় আটকে একই ভাবে কম দাম দেওয়া হয়। তিনি জানান, পুরো বাজারের ব্যবসায়ীরাই সিন্ডিকেট করে দাম কম দিচ্ছে। তার মতো মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লাভ তো দূরের কথা আসল টাকাও তুলতে পারবে না।


শহরের সুত্রাপুর এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হাসান জানান, তাদের এক লাখ ২০ হাজার টাকার গরু কোরবানির পর পরই চামড়ার দাম বলা হয় ৯০০ টাকা। বেলা ১২টার পর ওই চামড়ার দাম ৬০০ টাকার বেশি কেউ বলেনি। বাধ্য হয়ে আগের বলা দামের চেয়ে ৩০০ টাকা কমে তাদের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে।  


শহরের কলোনি এলাকার বাসিন্দা এখলাসুর রহমান ২০ হাজার টাকার কেনা খাসির চামড়া বিক্রি করেন মাত্র ৩০ টাকায়।


বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি একেএম আসাদুজ্জামান খান বলেন, নগদ টাকার সংকটের কারণে কোনো ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিচ্ছে না। এ কারণে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের নিজ দায়িত্বে চামড়া কিনতে হবে। তারা বিক্রি করতে না পারলে লবন দিয়ে সংরক্ষণ করে পরে বিক্রি করবে। এখনো বাজারে যে দাম আছে তা গত বছরের তুলনায় ভালো বলে জানান তিনি।