হাকিমপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা লিটন সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত

দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোতালেব হোসেন লিটন (৪৭) প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় তার প্রতিবেশী রুবেল মিয়া (৩২) এর সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সন্ত্রাসী রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

বুধবার (২২ জুন) সকাল সাড়ে নয়টায় উপজেলার বোয়ালদাড় ইউনিয়নের সাঁতকুড়ি (রেলগেট) বাজারে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা লিটনকে অতর্কিত ভাবে সিনেমার ইষ্টাইলে ধারালো চাকু দিয়ে গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে মূহুর্তে সেখান থেকে পালিয়ে যায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী রুবেল মিয়া (৩২)। পরে স্হানীয়রা মোতালেব হোসেন লিটনকে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাকিমপুর থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সায়েম। 

আহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা লিটন হাসপাতাল বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিযোগ করে বলেন, আমার প্রতিবেশী চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী রুবেল মিয়া পার্শ্ববর্তী মংলা বাজার এলাকার মাহলীপাড়ার এক মেয়ের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রেমের টানে রুবেল মিয়া ওখানে নিয়মিত যাতায়াত করতে থাকলে স্হানীয় লোকজন তাকে বাধা দেয় এবং তাকে মারপিটও করে। পরবর্তীতে বিষয়টি আমাকে বললে আমি বিষয়টি মোটামুটি ভাবে সমাধান করে দেই। এরপর আবারও সন্ত্রাসী রুবেল মিয়া ওখানে যাতায়াত করতে থাকলে স্হানীয় লোকজন তাকে বাধা দেয়।

আজ সকালে প্রতিদিনের ন্যায় আমি আমার ইজিবাইক নিয়ে সাঁতকুড়ি (রেলগেট) বাজারে যাত্রীর অপেক্ষায় বসে আছি। এমন সময় সন্ত্রাসী রুবেল আমার গাড়ির সামনে এসে বলে আমার বিষয়টা কি হলো? ওটা কি সমাধান হবে না। আমি বললাম আমাকে কি করতে হবে। একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে আমাকে সিনেমার ইষ্টাইলে গলায় আঘাত করে এবং মূহুর্তে পিঠে পাঁচটি ও দুই হাতে তিন চারটি আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্হানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং আমার চিকিৎসা চালায়। আমি সন্ত্রাসী রুবেল মিয়াকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করছি। 

হাকিমপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রাকিব হাসান বলেন, সকাল দশটার দিকে মোতালেব হোসেন লিটনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাকে ধারালো চাকু দিয়ে গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তার চিকিৎসা চলছে। এখন তিনি কিছুটা সুস্থ। 

হাকিমপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর সভাপতি কাহের আলী বলেন, আমি মোবাইলে খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে মোতালেব হোসেন লিটন এর সাথে দেখা করি এবং তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নেই। আমি সন্ত্রাসী রুবেল মিয়াকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 

এবিষয়ে হাকিমপুর থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সায়েম বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনা স্হলে পুলিশ পাঠিয়ে দেয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোতালেব হোসেন লিটন এর সাথে দেখা করে কথা বলেছি।

তিনি আরও বলেন, আমি যতটুকু বুঝতে পারছি, এটা কোন প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেওয়ার ঘটনা এবং ভিকটিম নিজে সেটি মিমাংসা করে দিলেও মূলত সেখান থেকে  শত্রুতা শুরু হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার কারণে আজ এধরণের ঘটনা ঘটেছে। আসামি পালাতক রয়েছে। আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে থানায় মামলা দায়ের এর প্রস্তুতি চলছে।