হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে "ঘরের শত্রু বিভীষণ"। অর্থাৎ দলীয় প্রার্থীর মূখোমূখি অবস্থানে বিদ্রোহী প্রার্থী। এতে করে কে পরাজিত হবে, আর কে বিজয়ী হবে এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে এলাকার সাধারণ জনগণ।
জানা যায়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হবে আগামী ১১ ই নভেম্বর। ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে ইউনিয়ন সমূহে। প্রতিটি ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সদস্যরা সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক, মিটিং মিছিল করে যাচ্ছে। পোস্টার লিফলেট ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গ্রাম্য হাট বাজার সমূহ।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী সংখ্যা মোট ১৬ জন। এরমধ্যে আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ৩ জন, বদলপুরে ৩ জন, জলসুখায় ৩ জন, কাকাইলছেওয়ে ২ জন ও শিবপাশায় ৫ জন।
১নং আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আশরাফুল হোসেন মোবারুল। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক, স্বাধীন মিয়া। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক ইসমাঈল হোসেন সরস, উনি আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
২নং বদলপুর ইউনিয়নে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুষেনজিৎ চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে অংশ নিয়েছেন অসীম চৌধুরী। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে অংশ নিয়েছেন নীলকমল চৌধুরী।
৩নং জলসুখা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আওয়ামীলীগ সমর্থক এডভোকেট রোকসানা আক্তার শিখা। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমেদ খেলু। এ ছাড়া মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বিএনপি সমর্থক জামির হোসেন।
৪নং কাকাইলছেও ইউনিয়নে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মিসবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন।
৫নং শিবপাশা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি তফছির মিয়া। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলী আমজদ তালুকদার।
এ ছাড়া ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নলিউর রহমান তালুকদার নলি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে মাহবুল আলম ও একই প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে একই দলের কোন নেতা-কর্মী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে একই দলের কতিপয় নেতা-কর্মীরা বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এতে করে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভূগছেন এলাকার সাধারণ ভোটাররা। তাই ইউনিয়নবাসী এ হেন দলীয় কর্মকান্ডকে "ঘর শত্রু বিভীষণ" বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।