করোনার ভ্যাকসিন না দিয়েই সুচ পুষ করার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: সোমবার ২রা আগস্ট ২০২১ ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
করোনার ভ্যাকসিন না দিয়েই সুচ পুষ করার অভিযোগ

করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে সারাদেশে দেয়া হচ্ছে ভ্যাকসিন। প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন গ্রহণে অনেকের একটু অনিহা থাকলেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সবাই এখন আগ্রহী ভ্যাকসিন নিতে।


গত কয়েকদিন ধরেই টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষদের উপছে পড়া ভীড় লক্ষ করা যায়। ভ্যকসিন পুশ করতে গিয়ে ভ্যাকসিন ছাড়াই সুচ পুশ করার অভিযোগ উঠেছে দেলদুয়ার উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সাজেদা আফরিনকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।


তদন্ত কমিটি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সোমবার সিভিল সার্জন অফিসে তদন্ত প্রতিবেদক জমা দেয়। পরে জেলা সিভিল সার্জন অফিস তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সুপারিশ করেছে।


সংশ্লিষ্ট্য সূত্রে জানা যায়, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২নং বুথে টিকা দিচ্ছিলেন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিন। এ সময় সাজেদা আফরিন টিকা গ্রহণকারিদের শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ না করেই শুধু মাত্র সুচ প্রবেশ করিয়ে ভ্যাকসিনসহ সিরিঞ্জ ফেলে দেয়।


টিকা নিতে আসা এক যুবকের বিষয়টি নজরে আসলে ঘটনাটি সাথে সাথেই হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শামিমকে জানান। আবাসিক চিকিৎসক ঘটনাস্থলে গিয়ে ২০টি পরিত্যাক্ত সিরিঞ্জের ভেতরে ভ্যাকসিন দেখতে পান। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে জানালে ডেপুটি সিভিল সার্জল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।


অভিযোগ প্রসঙ্গে সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিন বলেন, অনেক লোকের চাপ ছিলো। অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে।


এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রবীর কুমার বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং সিভিল সার্জন অফিসের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। তদন্ত কমিটি ঘটনার তদন্ত করে সোমবার সিভিল সার্জন অফিসে তদন্ত প্রতিবেদক জমা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাকে টিকা প্রয়োগের কাজ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।


এ ব্যাপারে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শামীম হুসাইন চৌধুরী বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে এর সতত্যা পাওয়া গেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তিনি ভ্যাকসিন শরীরে প্রয়োগ না করে তা ফেলে দিয়েছেন। ’ যিনি ভ্যাকসিন দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন তিনি আমাদের কাছে গাফিলতির কথা স্বীকার করেছেন।


এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিন ভ্যাকসিন ছাড়াই সুঁচ পুশ করার অভিযোগের সতত্যা মিলেছে। ২০টি পরিত্যাক্ত সিরিঞ্জের ভেতরে পুরো ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সুপারিশ করা হয়েছে।