ব্যস্ততা বেড়েছে বেতাগীর কামারদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শনিবার ১৭ই জুলাই ২০২১ ০৮:২২ অপরাহ্ন
ব্যস্ততা বেড়েছে বেতাগীর কামারদের

আগামী ২১ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে পারে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহায় পশু কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় দা, বটি ছোরা চাকুর চাহিদাকে সামনে রেখে তাই নড়ে চড়ে বসেছেন বেতাগীর কামাররা। 




সারা বছর অলস সময় পার করলেও কোরবানির মৌসুমে বেশ ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামার পাড়ায়। হাট-বাজারের খুচরা দোকানিদের জন্য লোহার অস্ত্রপাতি তৈরির পাশাপাশি কোরবানির উপযোগী দা-ছুরি বানানো এবং শান দিতে দিন-রাত কাজ করছেন কামাররা। 





কিন্তু করোনার কারণে ঈদের সময় ঘনিয়ে আসলেও বেচাকেনা না জমে উঠায় দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে তাদের কপালে।




শনিবার (১৭ জুলাই) পৌরশহরের কয়েকটি কামারশালা ঘুরে দেখা যায়, কেউ আসছেন কোরবানী করার অন্যতম অনুসঙ্গ ধারালো ডাসা, ছুরি, বটি, হাসুয়াসহ বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করতে। 





আবার কেউবা আসছেন এ সব সরঞ্জাম সান দিতে। বছরের অন্য সময়ে দিনে ২-৩ শ টাকা আয় হলেও এ সময়ে প্রতিদিন আয় হচ্ছে কয়েক হাজার টাকা।




চলমান লকডাউনে হাট বাজার বন্ধ থাকায় কামারদের উপর এবার বেশি চাপ পড়েছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন দম ফেলারও সময় নেই কামারশালার কারিগরদের। দিনরাত সমান তালে লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে উপজেলার প্রতিটি কামার ঘরে। 




চলতি বছরে বেতাগী উপজেলায় ৬ হাজার পশু কোরবানির লক্ষ্য মাত্র নির্ধারণ করেছে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস।




বেতাগী পৌর শহরের কাঁচাবাজার সংলগ্ন কামারশালার বিপুল কর্মকার জানান, গত বছরের চেয়ে এবার নতুন সরঞ্জাম তৈরির সংখ্যা বেশি। ছোট ছুরি ২৫০ থেকে ৩শ, বড় ছুরি ৫শ থেকে ১ হাজার, মাংস কাটার ডাসা ২ হাজার টাকা দরে বানানো হচ্ছে। 




চামড়া ছিলা ও মাংস কাটার জন্য ছোট চাকু ৩০ টাকা থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত, বটি ১৬০ টাকা থেকে ৫শ টাকা, বড় চাকু রয়েছে ৪ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। এছাড়াও পুরানো বটি, ছোট ছুরি ৬০ টাকা, ডাসা ও ছুরি ১৫০ টাকা করে ধার দেয়ার খরচ নেয়া হচ্ছে। 





নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। যে পরিমাণ অর্ডার নেওয়া হয়েছে তাতে ঈদের আগের দিন বিকেল পর্যন্ত কাজ করা লাগবে।





আরেক কামার ব্যবসায়ী অমল কর্মকার জানান, তাদের তৈরি যন্ত্রপাতি খুচরা ব্যবসায়ীরা এসে পাইকারি দরে কিনে নিয়ে যান। পরে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করেন তারা। 






এছাড়া কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা শুধু ঈদের সময় এ ব্যবসা করে থাকেন। লোহা ও ইস্পাতের মূল্য বৃদ্ধিতে অস্ত্র বানাতে খরচ বেশি হচ্ছে। এছাড়াও কয়লার দামও বেশি।




কামারশালায় মাংস কাটার ডাসা ও ছুরি বানাতে আসা আরিফুর রহমান জানান, এ বছর গরু জবাইয়ের সরঞ্জামের মূল্য সহনীয় পর্যায় নেই। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে দা-ছুরি। গত বছর যে ডাসা বানানো খরচ হতো ১ হাজার টাঁকা সেটা বানাতে এখন খরচ হচ্ছে ২ হাজার টাকা।




বেতাগী পৌরশহরের ব্যবসায়ী ও ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বলেন, কামাররা সারা বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। অথচ করেনার জন্য এবার বেচা বিক্রি কিছুটা কম। তবে প্রত্যাশা করছি দিন যত ঘনিয়ে আসবে বেচা বিক্রি তত বাড়বে।