জামালপুরে পানির সাথে পাল্লা দিয়ে ভাঙছে বসতভিটা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার ৫ই জুলাই ২০২১ ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
জামালপুরে পানির সাথে পাল্লা দিয়ে ভাঙছে বসতভিটা

জামালপুরের টানা ভারি বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, দশানী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত চারদিনে জেলার ইসলামপুরে প্রায় শতাধিক ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের বসত বাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।হুমকীর মধ্যে রয়েছে বাহাদুরাবাদ নৌ-থানা, দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী ও দেওয়ানগঞ্জ-রাজীবপুর সড়ক। নদ নদীর পানি বৃদ্ধি থাকায় নদী পারের বসত বাড়ি ও ফসলি জমি হুমকির মুখে রয়েছে।


রোববার (৪ জুলাই) সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,  চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের ২ নম্বর ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর হলকা, হাবড়াবাড়ী গুচ্ছ গ্রাম, টিনেরচর এলাকায় প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের বসত বাড়ি ও ফসলি জমি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে প্রায় ১ হাজার পরিবার। এসব পরিবার যমুনা ভাঙ্গনে হতাশায় রয়েছেন।চিকাজানি ইউনিয়নের খোলাবাড়ী, হাজরাবাড়ী, চর মাগুরী হাট, মন্ডল বাজার, বাহাদুরাবাদ নৌ-থানা ও দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী প্রধান সড়ক হুমকির মুখে রয়েছে।


ইউপি চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দীন আহাম্মেদ জানান, প্রতিবছরে যমুনা ভাঙ্গনে হারিয়ে যাচ্ছে চিকাজানি ইউনিয়নের মানচিত্র। বিগত ৩ বছরে ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চর ডাকাতিয়া গুচ্ছগ্রাম, হান্নান মাষ্টারের গ্রাম, হাজারী পাড়া, ২ নম্বর ওয়ার্ডের খোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, খোলাবাড়ী জামে মসজিদ, ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর মাগুরী হাট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৪ হাজার ভোটার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, রানীগঞ্জ, খাটিমাড়ী, ফুলছড়িসহ নানা জায়গায় বসবাস করছে নদী ভাঙ্গন পরিবারগুলো। চলতি বছর বর্ষা মৌসুম শুরুতেই হুমকির মুখে রয়েছে দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী সড়ক ,মন্ডল বাজারসহ দেওয়ানগঞ্জ-রাজীবপুর সড়ক।


অপরদিকে দশানী নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ঝালোর চর, চর বাহাদুরাবাদ, পৌল্লাকান্দি, ঝালোরচর প্রাচীন জামে মসজিদ ও ঐতিহ্যবাহী ঝালোরচর হাট। হাতীভাঙ্গা ইউনিয়নের সবুজপুর, পশ্চিম কাঠারবিল, চরআমখাওয়া ইউনিয়নের জিঞ্জিরাম নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে, পশ্চিম সানন্দবাড়ী, লম্বাপাড়া, সবুজপাড়া, ডাংধরা ইউনিয়নের পাথরের চর, মাখনের চর এলাকা।


বাহাদুরাবাদ নৌ-থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, যমুনার পানিবৃদ্ধি থাকায় নদীর পাড় ভাঙ্গছে, পশ্চিমে বালুর চর পড়ায় পূর্ব পাশে পানির স্রোত থাকায় নৌ-থানা হুমকিতে রয়েছে।জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানান, বাহাদুরাবাদের ঝালোরচর হাট ও মসজিদের ব্যাপারে ভাঙ্গন রোধ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর এলজি সড়কগুলোর বিষয় উপজেলা প্রকৌশলী রিপোর্ট করলে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবগত করতে পারবো।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ জানান, বর্ষা মৌসুম শুরুতেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তী এলাকা ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন দপ্তরে রিপোর্ট করা হবে। গতকাল (৩ জুলাই) বিকাল ঝালোরচর মসজিদ পরিদর্শন করেছি। আজ (৪ জুলাই) বাহাদুরাবাদ ঝালোরচর জামে মসজিদ রক্ষার্থে জিও ব্যাগ ফেলার জন্য নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে।