রাঙ্গাবালীতে অধ্যক্ষের অনিয়ম ও কমিটি নিয়ে উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এম সোহেল, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৫৪ অপরাহ্ন
রাঙ্গাবালীতে অধ্যক্ষের অনিয়ম ও কমিটি নিয়ে উত্তেজনা

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ আবদুল ছাত্তার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ আড়াল করতে তিনি নানা অপকৌশল অবলম্বন করছেন বলে দাবি করেছেন চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। বুধবার রাঙ্গাবালী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।  


নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ রুহুল আমিন কমিটি ও নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অনিয়ম করেছেন। তিনি তার পুত্রবধূ রাবেয়া ইসলাম শাওরাকে সহকারী গ্রন্থাগারিক এবং ছেলে রাকিব হোসেনকে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ দিয়েছেন। তারা নিয়মিত অনুপস্থিত থাকলেও বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। এছাড়া, সাবেক সভাপতিদের স্বাক্ষর জাল করে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।  


সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অধ্যক্ষ তার অপকর্ম ঢাকতে গোপনে একটি এডহক কমিটি গঠন করেছেন। এতে সভাপতি করা হয়েছে জসিম উদ্দিন নামের একজনকে, যিনি অতীতে একজন শিক্ষকের সাথে দুর্ব্যবহার করেছিলেন। এ কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কমিটি বাতিলের দাবিতে ১১ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন শুরু হয়, যা এখনো চলছে। ইতোমধ্যে কমিটির একজন অভিভাবক প্রতিনিধি ও একজন শিক্ষক প্রতিনিধি পদত্যাগ করেছেন।  


নজরুল ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, কমিটি বাতিলের দাবিতে প্রথম আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জেরে ছাত্রলীগ নেতা কে.এম. রিয়াজকে মারধরের অভিযোগ এনে তার ও বিএনপির ১১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি গত ২০ জানুয়ারি গলাচিপা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা হয়। এর আগে ১৫ জানুয়ারি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন অধ্যক্ষ রুহুল আমিন।  


তিনি বলেন, অধ্যক্ষ তার অপকর্ম ঢাকতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। এসব অপপ্রচারের মূল উদ্দেশ্য হলো নিজের দোষ আড়াল করা। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।  


এ বিষয়ে অধ্যক্ষ রুহুল আমিন দাবি করেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সেখানে তার পক্ষপাতিত্বের সুযোগ নেই। নজরুল ইসলাম তার পছন্দের ব্যক্তি সভাপতি না হওয়ায় এসব অভিযোগ করছেন। তিনি বলেন, ২০২০ সালে নিয়মিত কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল, যেখানে তার পুত্রবধূ ও ছেলে যথাযথ নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।  


এদিকে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর জানান, কমিটি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।