প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৩৬
দুষ্কৃতীদের আক্রমণে আবারও ওজন পার্কের রাস্তা রক্তে রঞ্জিত হলো। রক্তের খেলা যেন ওজনপার্কবাসীর বিধির বিধান। এ রক্তের খেলার শেষ শিকার হয়েছেন বিয়ানীবাজার উপজেলার চারাবই গ্রামের শাহাবুদ্দিন (৫৫)। ঘটনাটি ঘটেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক সকাল সাড়ে ১১টায় ৭৬ স্ট্রিট ও গ্লিন মোর এভিনিউর মধ্যে।
গ্লোবাল এয়ার মাল্টি সার্ভিস সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলীম সূত্রে জানা যায়, ৩ বছর পূর্বে আগত সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার চারাবই গ্রামের শাহাবুদ্দিন (৫৫) উল্লিখিত সময়ে ঘর থেকে বের হয়ে সিটি লাইনে আসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। এ সময় একটি কৃষ্ণাঙ্গ লোক বিপরীত দিক থেকে আসতে দেখে পথচারী শাহাবুদ্দিন (৫৫) রাস্তা পার হয়ে অপর পার দিয়ে হাঁটতে শুরু করেন। সাথে সাথে কালো লোকটি রাস্তা পাড়ি দিয়ে শাহাবুদ্দিনের পথ আটকে উপর্যুপরি নাকে মুখে কিল ঘুষি মেরে রক্তে রঞ্জিত করে ফোন ও ওয়ালেট নিয়ে পালিয়ে যায়।
আঘাতে নাকে, মুখে, দাঁতের চোয়াল মারাত্মক জখম হয়। মারাত্মক আহত অবস্থায়, মুখে আঘাতপ্রাপ্ত স্থান থেকে অঝোর ধারায় রক্ত বের হতে দেখে কে বা কারা পুলিশে ফোন করে। পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স এসে তাকে জামাইকা হাসপাতালে নিয়ে যায়। এবং সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল এগারোটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শাহাবুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উল্লেখ্য যে, শাহাবুদ্দিন এখানে তিনি তার মেয়ের সাথে বসবাস করেন।
ওজনপার্ক কমিউনিটিতে রক্ত ঝরা যেন দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রক্ত ঝরার সাথে সাথে প্রাণ সংহারও। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৯ সালের শেষ পর্যন্ত সাত জন দুষ্কৃতিদের হাতে নিহত হন। এছাড়া কত না জানা ঘটনা ঘটছে। অনেকে কথা বলার অক্ষমতা, ঝামেলামুক্ত থাকার কারণে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে, কাউকে বলতে রাজি হয় না।
ফলে অনেক সময় অনেক ঘটনা চোখের আড়ালে থেকে যায়। যে ঘটনাগুলো জানা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। পুলিশ আসে। পুলিশ তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে কমিউনিটির নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ চালিয়ে যায়। দুষ্কর্মকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসন বিরামহীন কাজ চালিয়ে যায়। কমিউনিটি নড়েচড়ে বসে।
ঘটে যাওয়া অনাকাঙিক্ষত ঘটনায় ভীতি,উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে জীবনেব ঝুঁকির মধ্যে সময়, অসময়, দিনে, রাতে প্রয়োজনের তাগিদে সবাই চলাচল করছে। রাতের বেলা সন্ত্রাসীরা নিরীহদের উপর আক্রমণ করে। এখন দিন -দুপুরে আক্রমণ করতে দ্বিধা করে না।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা আশির দশকের কথা অনেকে মনে করেন। সে সময় ইটালিয়ান, হিস্পানিক ও কৃষ্ণাঙ্গদের দাপট ছিল। হাতে গোনা কয়েকটি বাংলাদেশী পরিবার, ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। এখন সেটা পাল্টে এক চেটিয়া বাংলাদেশী কমিউনটি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবুও কৃষ্ণাঙ্গদের উৎপাত, ছিনতাই, মারামারি থেমে নাই।
এদের অপকর্মকে আইনের মাধ্যমে, কমিউনটির সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্থানীয় কাউন্সিল মেম্বার, পুলিশ প্রশাসন, সিনেটরদের সাথে আলোচনা করে নিরাপত্তা বিধান করা জরুরি। অন্যথায় যে কোন বড় ধরনের ক্ষতি হলে সেটা পুষিয়ে নেওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে দেখা দিবে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর