সভা-সমাবেশ একটি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার, সংবিধানসম্মত অধিকারÑ মন্তব্য করে বিএনপি নেতারা বলেছেন, আগামী দিনে গণতান্ত্রিক অধিকারের অংশ হিসেবে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে। সেক্ষেত্রে পুলিশের অনুমতির অপেক্ষায় বসে থাকবে না দলটি। গতকাল রবিবার গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতা। তারা বলেন, বিএনপি আশা করে, সরকার বিএনপির সভা-সমাবেশে ভ-ুল করতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিলে পুলিশ সরকারের অনৈতিক নির্দেশ মানবে না। বরং বিএনপিকে তার সংবিধানসম্মত অধিকার থেকে পুলিশ বঞ্চিত না করে সহযোগিতা করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, সভা-সমাবেশ একটি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার, সংবিধানসম্মত অধিকার। তাই আগামী দিনে বিএনপি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে। সেক্ষেত্রে দলের নেতাকর্মীরা পুলিশের অনুমতির অপেক্ষায় বসে থাকবেন না বলে গত শনিবারের সমাবেশ থেকে ঘোষণা দিয়েছেন।
আগামী দিনে দলের কর্মসূচিতে পুলিশের সহযোগিতা কামনা করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু জানান, দেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। ২৫ মার্চ, ১৯৭১ রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ ভাইয়েরা পাক আর্মির প্রতি গুলি ছুড়েছিলেন। তারা আমাদেরই কারও ভাই, বন্ধু, স্বজন। তাদের সরকার বিএনপির সভা-সমাবেশের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা দিতে বললে তারা যেন অবৈধ সরকারের অবৈধ নির্দেশ না মানেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, দেশে অনুমতির গণতন্ত্র চলছে। এ গণতন্ত্র চলবে না। সংবিধান মোতাবেক গণতন্ত্র চলবে। যে গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের অধিকার থাকবে। সেখানে কেউ বাধা দেবে না।
বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যার প্রতিবাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি এবং কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছে। সব সময় পুলিশের অনুমতি নিয়ে করলেও গত শনিবার বিএনপি পুলিশের অনুমতি না নিয়েই সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে নেতারা ঘোষণা দেন, পরবর্তী সময়ে কোনো কর্মসূচি পালনের জন্য পুলিশের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকবেন না তারা।
শনিবারের সমাবেশে অনুমতি নেওয়ার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। তিনি গতকাল রবিবার একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালনের অনুমতি চাইতে গত শনিবার সকালে বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি ডিএমপিতে গিয়েছিলেন। তখন নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে কিছু বলেননি ডিএমপির দায়িত্বশীলরা। পরে আবারও যান তারা। তখনো তারা অনুমতি দেননি। বাধ্য হয়ে বিএনপি পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন করে।
তিনি বলেন, যেহেতু দলের সিদ্ধান্ত ছিল যে কোনো মূল্যে কর্মসূচি পালনের, সেহেতু তারা কর্মসূচি পালন করেছেন। কর্মসূচিতে অংশ নিতে সকাল ১০টা থেকেই নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। নেতাকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পুলিশ বাধ্য হয়ে পিছু হটে।
এদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আমরা বিভাগীয় সমাবেশ করেছি। এসব সমাবেশের আগে আমরা ঘোষণা দিয়ে বলেছিলাম সমাবেশ আমরা করবই। এমন ঘোষণার কারণেই আমরা সমাবেশগুলো করতে পেরেছিলেন। কারণ সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার আগে পুলিশ প্রশাসনও দেখতে চান নেতাদের কমিটমেন্ট কেমন। নেতাদের কমিটমেন্ট থাকলে পুলিশও সহযোগিতা করে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু বলেন, বিএনপি আগামী দিনে পুলিশের অনুমতির জন্য বসে থাকবে না। কর্মসূচি ঘোষণা করে তা পালন করবে। তবে কর্মসূচি পালনের তারিখ ও সময় উল্লেখ করে শুধু পুলিশকে অবহিত করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।