দুদকের ভুলে পাটকল শ্রমিক জাহালমের তিন বছর কারাভোগের ঘটনায় দেশে ‘ক্রিমিনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের’ ছবিই ভেসে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের অত্যাচারী মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয় বলেও মন্তব্য করেছে দলটি। সোমবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলেনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দুদকের ভুলে তিন বছর পর কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন জাহালম। নির্দোষ জাহালম এতদিন কারাগারে ছিলেন শুধু আওয়ামী সরকারের ক্ষমতা-আশ্রিত দুদকের রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশনে আসীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের অত্যাচারী মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়। সে জন্য দুদকবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমন করতে গিয়ে বেপরোয়া অনাচারে লিপ্ত থেকে মনুষ্যত্বহীনতার ডালপালা বিস্তার করেছে। ‘আর এতে নির্দোষ-নিরীহ-নিরাপরাধ মানুষও দুদকের করা মিথ্যা মামলার অমানবিকতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।’ বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ভুয়া ভোটের সরকারের চাহিদা মেটাতে গণতান্ত্রিক শক্তিকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি করতে দুদক উদ্ভ্রান্ত উগ্রতা নিয়ে কাজ করছে। ‘আর সেটির নির্মম শিকার হয়েছেন দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং অসংখ্য নেতৃবৃন্দ। এ ধরনের নির্বিচারে মামলার ধারাবাহিকতায় প্রকৃত অপরাধীকে বাদ দিয়ে নিরীহ যুবক জাহালমকে আটকে রাখা হয় কারাগারে।’
রিজভী বলেন, বিরোধী শক্তিকে দমন করতে আওয়ামী অবৈধ গোষ্ঠীর একটি হাতিয়ার হলো বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশন। ‘এই দুদক আইনি নিয়মকানুন কিছুই না মেনে আওয়ামী সরকারের শীর্ষ ব্যক্তির নির্দেশে দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে আটকিয়ে রাখতে মামলা সাজিয়েছে।’ দুদকের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, দুদক ভুয়া ভোটের সরকারের ‘১০ বছরে মেগাদুর্নীতি’র কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারেনি। যদি করতেই পারত, তবে আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-উপদেষ্টা ও নেতা, যাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ, তারা আজকে প্রবল প্রতাপে দেশব্যাপী দাপিয়ে বেড়াতে পারতেন না।
‘দেশের বাইরে বেগম পল্লী ও সেকেন্ড হোম গড়ে উঠত না। নিউইয়র্কে মন্ত্রীর পুত্রের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থাকত না। সাবেক অর্থমন্ত্রী চার হাজার কোটি টাকা চুরিকে দুর্নীতি বলতে নারাজ হতেন না।’ রিজভী বলেন, দুদকের কারণেই দেশে ‘ক্রিমিনাল ইকোনমি’র আশকারা পেয়ে পত্র-পল্লবে বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। জাহালমের দীর্ঘদিন কারাভোগের ঘটনায় দুদকের ভূমিকা নজিরবিহীন ও ন্যক্কারজনক। এ ঘটনায় দেশে একটি ‘ক্রিমিনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ এর ছবিই ভেসে উঠেছে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।