খুলনায় আন্দোলনরত ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা উদ্বেগ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, দেশে এখনো চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অযথা দাপট অব্যাহত রয়েছে—এমনকি যারা ক্ষমতায় আসেননি, তারাও প্রশাসনিক ক্যু করার চেষ্টা করছেন। তার ভাষায়, “আগের চেয়ে চাঁদার রেট বেড়ে গেছে, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।”
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনার শিববাড়ী বাবরী চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করীম। সভায় শফিকুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে এখনো ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হচ্ছে। “জনগণ ভোট দিক আর না দিক, ক্ষমতায় যেতেই হবে”—এ ধরনের মনোভাবের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “বন্ধুগণ, বেলা শেষ; এ দেশে এভাবে আর হবে না।”
তিনি সতর্কতা দিয়ে বলেন, কেউ যদি গণমানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ করতে চায়, প্রয়োজন হলে আবারও “৫ আগস্টের মতো গণবিপ্লব” অনুষ্ঠিত হবে। তার দাবি—এই বিপ্লবই অতীতে ফ্যাসিবাদ ও দুঃশাসন সরিয়ে দিয়েছিল।
জামায়াতের আমির আরও অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজদের উত্থান দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। তিনি বলেন, “আজ কেউ শান্তিতে ব্যবসা করতে পারে না। সমাজজীবন তটস্থ।”
তিনি বক্তৃতায় ৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রবর্তনের কথাকে “ফ্যাসিবাদি কনসেপ্ট” বলে মন্তব্য করেন। বলেন, জিয়াউর রহমানের আমলে ওই সংবিধান পরিবর্তন হয়েছিল; ফলে ৭২-এর সংবিধানকে সমর্থন করা মানে শহীদ জিয়ার বিরোধী অবস্থান নেওয়া।
তরুণসমাজের ভোটাধিকার হরণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাদের বয়স ৩৫ বা কম, তারা তিন নির্বাচনেই ভোট দিতে পারেননি। তাদের উদ্দেশে তিনি ঘোষণা দেন—“তোমাদের ভোটের পাহারা দিতে আমরা নিজেরাও যুবক হয়ে দাঁড়াবো।”
তিনি বলেন, তাদের আন্দোলনের লক্ষ্য নির্দিষ্ট কোনো দলের বিজয় নয়; বরং ১৮ কোটি মানুষের বিজয়, মজলুম জনগণের বিজয় এবং আল্লাহর কুরআনের বিধানের বিজয়। ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন—মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি মুসা বিন ইজহার, মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী, ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন, অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদসহ বিভিন্ন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।