প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৩২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস মঙ্গলবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মপদ্ধতি ও চলমান ডাকসু নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি ক্ষুব্ধ ভঙ্গিতে কথা বলেন। উপস্থিত বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সামনে টেবিল চাপড়ে ভিসিকে ধমক দেন এবং নানা বিষয়ে সমালোচনা করেন।
ঘটনার সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা পরে গণেশকে শান্ত করতে চেষ্টা করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উপাচার্যও গণেশকে চুপচাপ বসে থাকার নির্দেশ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, গণেশের এই আচরণ কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি করলেও কোনো গুরুতর ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান সাবেক অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, উপ-উপাচার্য ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। তারা মূলত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।
ছাত্রদল নেতা গণেশ চন্দ্র রায় সাহসের বক্তব্যে উঠে আসে যে, নারী শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে আসার ক্ষেত্রে বাসের সংখ্যা কম এবং এটি নির্বাচনী কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে। তিনি মনে করেন, এই ধরনের অনিয়ম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল আগে থেকেই সমাধান করা।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের অন্যান্য নেতারা গণেশের ক্রিয়াকলাপ নিয়ে মন্তব্য করেছেন, তারা বলেন, “তিনি চ্যালেঞ্জিং হলেও মূলত শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. নিয়াজ আহমেদ খানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে। তবে কোনো ধরনের অশোভন আচরণ কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।
ছাত্ররাজনীতির প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনী সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা স্বাভাবিক হলেও প্রশাসনের সঙ্গে সম্মানজনক সম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
এই ঘটনার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি ও প্রশাসনের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের নতুন মাত্রা ফুটে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীরা উভয়ই আশা করছেন, পরিস্থিতি শান্তভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা হবে এবং নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
ছাত্ররাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ এবং ভোটপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলতে পারে।