প্রকাশ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:২১
রাজধানীতে আবারও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর বিক্ষুব্ধ জনতা হঠাৎ করেই দলটির কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় ভেতরের আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি তাতে অগ্নিসংযোগও করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার ঘটনার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে সেদিন শাহবাগে একটি সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা পল্টনে নিজেদের কার্যালয়ের দিকে রওনা দেন। পথিমধ্যেই তারা জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটে।
আক্রমণকারীরা কার্যালয়ের দরজা-জানালা ভাঙার পাশাপাশি ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র গুঁড়িয়ে দেয়। পরে এগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিলে মুহূর্তেই ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। এতে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ মানুষ দৌড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যায়।
এর আগে গত শনিবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যাতেও একই ধরনের ভাঙচুর হয়েছিল জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে। সেদিন গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল কার্যালয়ের সামনে পৌঁছে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। পরবর্তীতে কিছু অংশগ্রহণকারী দলীয় স্লোগান দিয়ে ভাঙচুরে অংশ নেয় এবং কার্যালয়ের নিচতলার একটি স্টোররুমে অগ্নিসংযোগ করে।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও জলকামান ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীরা কিছুটা পিছু হটলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত গিয়ে আগুন নেভায়। এরপরও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে এবং যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়।
নেতাকর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ বিক্ষোভে অংশ নিলেও সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তবে তাদের কথা আমলে না নিয়ে কিছু উত্তেজিত কর্মী হামলা অব্যাহত রাখে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে।
স্থানীয়রা বলেন, এ ধরনের হামলা-অগ্নিসংযোগ শুধু রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়ায় না, সাধারণ মানুষকেও ভীত-সন্ত্রস্ত করে তোলে। রাজনৈতিক বিরোধ নিষ্পত্তি শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে হওয়া উচিত বলে তাদের মতামত।
ঘটনার পর আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পুরো এলাকা কঠোর নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। তবে কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং দোষীদের শনাক্তে কাজ চলছে।