প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৪
দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির লক্ষ্যে পরাজিত রাজনৈতিক শক্তি নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এই ষড়যন্ত্র পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে চলেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
৮ জুলাই রাজধানীর একটি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয় একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, যার আড়ালে চলছিল নাশকতার প্রস্তুতি। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলা এই কর্মশালায় অংশ নেয় প্রায় ৪০০ জন নেতাকর্মী। প্রশিক্ষণ শেষে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তারা মূলত পরিকল্পনা করছিল হামলা, জনসমাগম, আত্মগোপন ও শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিভিন্ন কৌশল।
এই প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। তারা একেকজন ভুয়া পরিচয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন, যেমন রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি বা বাগান পরিচর্যাকারী। কনভেনশন হলটি বুক করেন শামীমা নাসরিন শম্পা, যার বাড়ি গোপালগঞ্জে এবং যিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত।
এই চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে, যার বাড়ি বরগুনায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, প্রশিক্ষণে বলা হয়েছে কোথায় হামলা হবে, কিভাবে পালাবে, কীভাবে কথোপকথন গোপন রাখা হবে, কিভাবে জনসমর্থন তৈরি করা যাবে এবং কীভাবে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
এই গোপন পরিকল্পনার বিষয়ে প্রথম তথ্য পায় এনএসআই ও এসবি। তাদের তথ্য অনুযায়ী শম্পা ও সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয় ভাটারা থানায়।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক জানান, ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে হামলার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ফ্যাসিবাদী চক্রকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ষড়যন্ত্রে জড়িতদের ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও যারা পলাতক, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।