প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১৮:৩৭
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে জামায়াতে ইসলামী অবশেষে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুরোদমে ফিরছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দলটির পুরনো নির্বাচনী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ পুনরায় বরাদ্দ দেওয়ায় তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আবার নতুন করে উন্মুক্ত হলো। মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে।
২০১৩ সালে জামায়াতের একাত্তরের ভূমিকা ও সংবিধান বিরোধী অবস্থানের প্রেক্ষিতে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। সেই থেকে দলটি আর কোনো জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। বিভিন্ন সময়ে নতুন নামে কিংবা অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করলেও নিবন্ধন ও প্রতীক ছাড়া তারা মূলধারায় ফিরে আসতে পারেনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জামায়াত ইসলামী একাধিকবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে। তারা একাধিক মামলাও করেছে এবং আইনগতভাবে সেই প্রক্রিয়া চালিয়ে গেছে। অবশেষে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও আইনি অচলাবস্থা কাটিয়ে দলটি আবার বৈধভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেল।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রতীক পুনরায় বরাদ্দ পাওয়া মানেই কেবল নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নয়, বরং এটি দলটির রাজনৈতিক স্বীকৃতি এবং জনসমর্থনের দিক থেকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। বিশেষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতের এ প্রত্যাবর্তন নানা আলোচনার জন্ম দিচ্ছে।
এদিকে জামায়াত নেতৃবৃন্দ ইসির এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, এটি ন্যায়বিচার ও সংবিধানসম্মত রাজনীতির বিজয়। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, দেশে গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দলটি জনগণের কাছে আবারও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।
রাজনৈতিক মহলে এ খবরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, ইতিহাস ভুলে যাওয়া উচিত নয়, আবার অনেকে মত প্রকাশ করছেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে যে কেউই রাজনীতিতে অংশ নিতে পারে এবং জনগণের রায়ই হবে চূড়ান্ত।
জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ রাজনীতির পথে চলবে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। এখন দেখা যাক, দাঁড়িপাল্লা ফিরে পেয়ে দলটি রাজনীতির ময়দানে কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।