আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার এই তিনটি বিষয় একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, বরং এই সবকিছু মিলেই গড়ে উঠছে এক গণঅভ্যুত্থানের বাস্তবতা। বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শনিবার আয়োজিত এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বরিশাল বিভাগের উন্নয়ন কার্যক্রম সংক্রান্ত নাগরিক সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ১৭-১৮ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন দাবি করে আসছে। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে ক্ষমতায় যেতে চাওয়াটাই গণতান্ত্রিক। কাজেই নির্বাচন চাওয়া যেমন যৌক্তিক, তেমনি এই দাবিকে নিয়ে কাউকে ট্রল বা হেয় করা একদম অনৈতিক।
রাষ্ট্রের কার্যক্ষমতা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, রাষ্ট্র দেবী দুর্গার দশ হাতের মতো একসঙ্গে বহু কাজ করার সক্ষমতা রাষ্ট্রের আছে। হাসপাতাল নির্মাণ, ডাক্তার তৈরি, দুর্নীতি প্রতিরোধসহ নানা খাতে রাষ্ট্রকে সমান্তরালভাবে কাজ করতে হবে এবং সেই সামর্থ্য রাষ্ট্রের থাকা উচিত।
প্রফেসর ড. ইউনুসের প্রস্তাবিত ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত রোডম্যাপকে যৌক্তিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ড. ইউনুসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা ও দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে তিনি বিশ্বাস করেন, এই রোডম্যাপ থেকে সরে আসার সুযোগ নেই। তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ধারাবাহিক সংলাপের আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের ‘প্রোপাগান্ডা মেশিন’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে বিএনপি ও এনসিপিকে একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে এসব দ্বন্দ্ব সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে, যা গণঅভ্যুত্থানের ঐক্য নষ্ট করছে।
বর্তমান রাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এখন দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সবখানেই আমলানির্ভরতা চলছে। এমন বাস্তবতা ১৯৭১ সালেও দেখা যায়নি। সেবা খাতে কার্যত ভাঙন ধরেছে।
স্থানীয় সরকারে প্রশাসক নিয়োগের প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, যারা অতীতে বিএনপি, জামায়াত ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাস্তবতায় কাজ করেছেন, তাদের মধ্য থেকে নীতিমালা অনুযায়ী দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। তবে এটা যেন আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বার্মা করিডোর, পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং জাতীয় স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়েও তিনি গণভিত্তিক ঐক্যমতের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।