মেরিনা বেসরা পেলেন 'অদম্য নারী' সম্মাননা পুরস্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, নিজস্ব প্রতিনিধি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: রবিবার ৯ই মার্চ ২০২৫ ০৯:৩৪ অপরাহ্ন
মেরিনা বেসরা পেলেন 'অদম্য নারী' সম্মাননা পুরস্কার

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শ্রেষ্ঠ ছয়জন ‘অদম্য নারী’-এর হাতে সম্মাননা পুরস্কার তুলে দিয়েছেন বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এই সম্মাননার মধ্যে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মেরিনা বেসরা সফল জননী নারী ক্যাটাগরিতে ‘অদম্য নারী পুরস্কার-২০২৫’ অর্জন করেন।


মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অর্থনীতিতে অবদানে শরিফা সুলতানা, শিক্ষা ও চাকরিতে অবদানে হালিমা বেগম, জীবন সংগ্রামে জয়ী নারী লিপি বেগম, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানে মো. মুহিন (মোহনা) এবং বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলও পুরস্কৃত হন।


মেরিনা বেসরা, যিনি বিরামপুর উপজেলার আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে উঠে এসে সফল জননী হিসেবে জাতীয় শ্রেষ্ঠ সম্মাননা অর্জন করেছেন, তার জীবনযুদ্ধ এক সত্যিকার অনুপ্রেরণা। দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের ভবানীপুর আমাইল পাড়া গ্রামের সম বেসরার কন্যা মেরিনা। সংসারে অভাবের কারণে প্রথম দিকে খুব কষ্টে দিন পার করলেও তার সন্তানদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ এবং মেধা তাকে অপ্রতিরোধ্য করেছে।


তার বড় ছেলে মাবিয়াস মুরমু বর্তমানে ৫০ নম্বর ব্যাটেলিয়ন বি.জি.বি তে হাবিলদার পদে কর্মরত, মেজো ছেলে মানুজেল মুরমু ওয়েল্ডিং প্রশিক্ষণ নিয়ে ঢাকায় কাজ করছেন, আর ছোট ছেলে শামুয়েল মুরমু সরকারি চাকরির মাধ্যমে সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছে। তার কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ আজ তার পরিবার সুখী এবং স্বাবলম্বী।


মেরিনা বেসরা বলেন, “আমরা কখনো ভাবিনি যে একদিন আমাদের জীবন এমন সুন্দর হবে। আমাদের তিন রত্নই আমাদের কষ্টের দিন মুছে দিয়েছে।” তার বক্তব্যে, তার ছেলে-মেয়েরা এবং নাতি-নাতনীরা তাকে সুখী করে রেখেছে। তিনি তাঁর প্রয়াত স্বামীকে স্মরণ করে বলেন, “আমার স্বামী আমাদের ছেলেদের সফলতা নিজ চোখে দেখে গিয়েছিলেন, আমি এর জন্য সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই।”


বিরামপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোশাররত জাহান জানান, মেরিনা বেসরা গত বছর উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হন এবং এবছর বিভাগীয় পর্যায়েও শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হন। তার এই অর্জন বিরামপুরবাসীকে গর্বিত করেছে।