বাংলাদেশে গত আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পার হয়েছে, আর এখন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ বেড়েছে। সম্প্রতি বেলজিয়ামভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) এই অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আইসিজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার যাত্রার শুরুতে কিছুটা সহজ মনে হলেও এখন চাপ বাড়ছে। শুধু রাজনৈতিক সংস্কার নয়, শাসন ব্যবস্থার উন্নতির জন্যও সরকারের ওপর জনগণের চাহিদা বেড়েছে। এই সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার জন্য বিএনপির চাপ ছিল, তবে ড. ইউনূস জানিয়েছেন যে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের তারিখ তো এক দিকে, তবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা অব্যাহত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ড. ইউনূস বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন, যা সংবিধান ও নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনর্গঠন নিয়ে কাজ করছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে এসব কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে।
আইসিজি আরও জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি বর্তমানে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে অপেক্ষমান সরকার হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা কিছুটা অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। অতীতে বিএনপির মধ্যে স্বৈরাচারী প্রবণতার কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই উদ্বেগ থেকেই সরকারের সংস্কারের লক্ষ্য দেশকে স্বৈরাচারের কবলে পড়া থেকে বাঁচানো।
আইসিজির প্রতিবেদনে অর্থনীতির অবস্থাও তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করছে, তবে সুফল পেতে জনগণকে আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কেও টানাপড়েন চলছে, এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। তবে সরকার কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।