প্রকাশ: ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪৫
উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন। রাত ১০টায় কাতারের আমির তামিম বিন হাম্মাদ আল থানির পাঠানো বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা ছেড়ে যাবেন তিনি।
তার এই বিদেশ যাত্রা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই জানতে চাচ্ছেন, কেন চার মাস সময় নেওয়া হলো। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২ জানুয়ারি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনে তাকে দেখতে গিয়ে জানিয়েছিলেন যে তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে পারেন। এরপর থেকেই বিদেশ যাত্রার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
সিনিয়র সাংবাদিক আশরাফ কায়সার মনে করেন, সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনার পর খালেদা জিয়া নিশ্চিত হয়েছেন যে চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফিরতে পারবেন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের মতে, দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে এই যাত্রার ভবিষ্যৎ এখনও অনির্ধারিত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তারেক রহমান দেশে ফিরবেন তবে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে সময় লাগবে। যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ জানিয়েছেন, তাদের প্রধান লক্ষ্য খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। তিনি সুস্থ হওয়ার পরই দেশে ফেরার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, খালেদা জিয়া সব মামলায় খালাস বা জামিন পেয়েছেন। ফলে চিকিৎসা শেষে তার দেশে ফিরতে আইনগত কোনো বাধা নেই। অন্যদিকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোও আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের চেষ্টা চলছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর খালেদা জিয়া মুক্তি পান। তখন থেকেই তার বিদেশ যাওয়ার আর কোনো বাধা ছিল না। বিএনপির নেতাদের মতে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আশ্বাস পেয়েই তিনি এখন চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরবেন তা চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন। এদিকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
সিনিয়র সাংবাদিক আশরাফ কায়সার মনে করেন, সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। তবে তিনি পুরোপুরি নিশ্চিন্ত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে।
অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের মতে, দেশের অনিশ্চিত পরিস্থিতি এবং টু-মাইনাস থিওরির পুনরুত্থান এই যাত্রাকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করেছে। দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তার ওপর নির্ভর করছে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ভবিষ্যৎ।