প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:১৮
সম্প্রতি জাতীয় সংগীত নিয়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সাবেক আমীর গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী দেওয়া বক্তব্য নিয়ে দেশে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামী একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে, যেখানে দলটি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে এবং আযমীর বক্তব্যের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে।
জামায়াতের বর্তমান আমীর এক বিবৃতিতে বলেন, “আব্দুল্লাহিল আমান আযমী সাহেবের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি দেশের জাতীয় সংগীতের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা পোষণ করেন এবং এর তাৎপর্যকে কখনও অবমূল্যায়ন করেননি। তার বক্তব্য ছিল দেশের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে একটি সৎ ও গঠনমূলক সমালোচনা। কিন্তু কিছু কুচক্রী মহল তা ভিন্নভাবে তুলে ধরে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে।”
আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল যখন তিনি এক জনসভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় সংগীতের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, দেশের চলমান রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে জাতীয় সংগীতের মূল ভাবনা কতটুকু প্রতিফলিত হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। আযমীর এই মন্তব্যের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। অনেকেই তার এই বক্তব্যকে জাতীয় সংগীতের প্রতি অসম্মান হিসেবে দেখেছেন এবং এ নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন।
বিবৃতিতে জামায়াত আরও উল্লেখ করে, “আমরা জাতীয় সংগীতকে দেশের অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে দেখি। এটি আমাদের জাতীয় ঐক্যের অন্যতম নিদর্শন। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় সংগীতের মূল বার্তাটি কতটুকু কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করা অপরিহার্য। গোলাম আযম সাহেব সেই আলোচনার সূচনা করতে চেয়েছেন মাত্র।”
জামায়াতের বক্তব্যে আরও বলা হয়, "জাতীয় সংগীতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা অপরিসীম। আমরা বিশ্বাস করি, জাতীয় সংগীত দেশের সকল জনগণের ঐক্যের প্রতীক এবং এটি আমাদের সকলের মধ্যে দেশপ্রেম ও সমবেদনা জাগিয়ে তোলে। তবে জাতীয় সংগীতের মূল বার্তাগুলি কীভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা হওয়া উচিত, যা দেশের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।"
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর এই অবস্থান গ্রহণের পরও বিভিন্ন মহল থেকে বিতর্ক থামেনি। অনেকেই মনে করছেন যে, গোলাম আযমের মন্তব্যের মাধ্যমে জাতীয় সংগীতের প্রতি অবমাননা করা হয়েছে এবং এই ধরনের বক্তব্য দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য ক্ষতিকর।
তবে জামায়াত এই বিতর্ককে ভিত্তিহীন বলে দাবি করছে এবং বলছে যে, আযমীর বক্তব্যের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে একটি গঠনমূলক আলোচনা শুরু করা।
এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক কতটুকু দীর্ঘায়িত হবে এবং এর প্রভাব দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কীভাবে পড়বে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জামায়াতে ইসলামী তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলেও, জাতীয় সংগীতের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।