জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতৃবৃন্দ। তারা জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের সিদ্ধান্তকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেন। সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা করেন সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহ-সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় নেতা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ ও সাজ্জাদ জহির চন্দন।
সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, সরকার অগণতান্ত্রিক এবং জুলুমে দেশ চালাচ্ছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেটের এবং লুটেরাদের সরকার। পার্লামেন্টের ৬২ শতাংশ ব্যবসায়ী সদস্য, তারা নিজ নিজ শ্রেণি স্বার্থে, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে দেশ পরিচালনা করছে। সরকার জনগণের পেটে লাথি মারছে। বাজার অর্থনীতির বিপরীতে জনগণের অর্থনীতিতে দেশ পরিচালনা করা না গেলে দেশের অবস্থা আরো শোচনীয় হবে। ব্যবস্থা বদল করে তীব্র গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণের বিকল্প শক্তি গড়ে না তোলার কোনো বিকল্প নেই।
সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ডিজেল, কেরোসিনসহ জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি সরকারের পক্ষে অপরাধমূলক কাজ। তেলের দাম বাড়লে যাতায়াতসহ সব কিছুর দাম বাড়বে। অর্থনীতিতে চাপ পড়বে। জনজীবন বিপর্যস্ত হবে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববাজারে দাম কমানোর পরে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে এই লুটেরাদের সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। জনস্বাথের্র কথা ন্যূনতম বিবেচনা করতে ব্যর্থ এই সরকারের উচিত ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে সিপিবি জেলা-উপজেলায় ঘেরাও, অবরোধ ও প্রয়োজনে হরতালের মতো কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
সিপিবি সহ-সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ বলেন, এই সরকার গ্যাস, তেল, সার, কেরোসিন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করে দেশকে নজিরবিহীন বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। মধ্যরাতের সরকার মধ্যরাতেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জনগণের জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলছে।
সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, বাংলাদেশের টাকার এখনও গুরুতর সংকট হয়নি। লুটেরাদের আর পাচারকারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে দেশ পরিচালনা করুন। আইএমএফ-এর কাছ থেকে ধার করে দেশকে বিপদে ফেলার কোনো নৈতিক অধিকার আপনাদের নেই।
সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, গণবিরোধী সরকার তার গণবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই সিদ্ধান্তে জনগণের ন্যূনতম সমর্থন নেই। গতকাল থেকেই পরিবহনে নৈরাজ্য শুরু হয়ে গেছে। এই গণবিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই গড়ার আহ্বান জানাই।
পুরানা পল্টনে প্রতিবাদ সমাবেশ পরবর্তী বিক্ষোভ মিছিল প্রেস ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে জ্বালানি তেল, সারের দাম না কমানো পর্যন্ত সারা দেশে সভা-সমাবেশ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখতে ও ঘেরাও-অবরোধ-হরতাল সংগঠিত করার প্রস্তুতি নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।