বরিশালের পর্দানশিন নারীরা তাদের চেহারা দিয়ে পরিচয় যাচাই না করে, ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় যাচাই করার দাবি জানিয়েছেন। এ দাবি নিয়ে তারা তিন দফা দাবিতে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ সমাবেশ এবং স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। সকাল ১১ টায় নগরীর নথুল্লাবাদ আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় চত্বরে শতাধিক পর্দানশিন নারী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
পর্দানশিন নারীরা তাদের তিনটি দাবি তুলে ধরেন। প্রথমত, গত ১৬ বছর ধরে সাবেক ইসি কর্মকর্তাদের দ্বারা পর্দানশিন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, পর্দানশিন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসি অধিকার রক্ষার পাশাপাশি অবিলম্বে এনআইডি এবং শিক্ষা অধিকার প্রদান করার দাবি জানান। তাদের দাবি, পরিচয় শনাক্তের জন্য পুরোনো চেহারা মিলানোর পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হোক। তৃতীয়ত, ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার সময় পুরুষ সহকারী না রেখে নারী সহকারী বাধ্যতামূলক রাখা হোক।
সমাবেশ শেষে বরিশাল বিভাগের পর্দানশিন নারী সমাজের পক্ষে আছমা বুশরা বিনতে ইসলাম বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমানের কাছে তাদের দাবিগুলি নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন। নারীরা বলেন, শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে তারা বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে তাদের নাগরিকত্ব আটকে রাখা হয়েছে এবং শিক্ষার অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া, পরিচয় যাচাইয়ের জন্য চেহারা মিলাতে পুরুষদের সামনে তাদের চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তাদের ধর্মীয় এবং প্রাইভেসি অধিকার লঙ্ঘন করছে।
তারা আরও বলেন, মানুষের মুখের ছবি পরিবর্তনশীল এবং এটি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হতে পারে না। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে ঋণ উত্তোলনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং এতে প্রতারণা ও অনিয়ম কমেছে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের মাধ্যমে দেশে রোহিঙ্গাদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ার মতো প্রতারণার ঘটনাও কমে এসেছে।
পর্দানশিন নারীরা তাদের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই এখন সর্বাধুনিক এবং গ্রহণযোগ্য মাধ্যম, যা মানুষের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।