ভারতীয় গণতন্ত্রে বহুদলীয় সংসদীয় কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বলেছেন, স্বাধীনতার ৭০ বছর পর মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, বহুদলীয় সংসদীয় ব্যবস্থা আসলে ব্যর্থ কি-না? অমিত শাহর এমন মন্তব্যে পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, ‘এক দেশ এক ভাষা’র পর এবার কি তাহলে ‘এক দেশ এক দল’ নীতিতে হাঁটছে ক্ষমতাসীন বিজিপি সরকার? সম্প্রতি ভারতে অভিন্ন ভাষা হিসেবে হিন্দির পক্ষে কথা বলেছেন অমিত শাহ। এদিকে বুধবার দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’র অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেন, ‘স্বাধীনতার ৭০ বছর পর মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, বহুদলীয় সংসদীয় ব্যবস্থা আসলে ব্যর্থ কি-না? ওই ব্যবস্থা কি দেশবাসীর লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে? মানুষ আশাহত। আঞ্চলিক দলগুলো আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি।’
মূলত দ্বিতীয় ইউপিএ আমলে নীতিহীন ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে অমিত এমন মন্তব্য করেছেন। তবে বিরোধী অনেকেই বলছেন, এমন বক্তব্যে বিজেপির ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ মনোভাব যেমন স্পষ্ট, তেমনই ভাষার পর বহুদলীয় ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে নাজুক অর্থনীতি থেকে নজর সরাতে কৌশল নিয়েছেন। ‘টার্গেট’ ছোঁয়ার কৌশল ব্যাখ্যা করে অমিত শাহ বলেন, ‘অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, দৃঢ় নেতৃত্ব, দক্ষ পরিকল্পনার সঙ্গে ১৩০ কোটি মানুষকে একাত্ম করলে তবেই প্রধানমন্ত্রীর নতুন ভারতের লক্ষ্য পূরণ সম্ভব। নীতির ভিন্নতায় যে লক্ষ্যপূরণ অসম্ভব।’ অমিত শাহর এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে কংগ্রেস। দলের বক্তব্য, এমন ভাবনা ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপরে সরাসরি আক্রমণ।
কংগ্রেসের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা টুইটারে বলেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রকে গুরুত্বহীন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্য ভয়াবহ এবং সেটা যে ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে, তা গৃহীত হলে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে সরাসরি আঘাত করবে।’ অমিতের মন্তব্যকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘এমন মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এনডিএ নিজেও একাধিক দলকে নিয়ে তৈরি এবং সেই সব দল বিভিন্ন রাজ্যে সরকারও গড়েছে। নীতীশ কুমার, প্রকাশ সিংহ বাদল, উদ্ধব ঠাকরেরা নিশ্চয়ই শুনছেন। তারা উত্তর দিন।’
প্রশ্ন উঠেছে, অমিত শাহের ধারাবাহিক এমন মন্তব্য কি তাহলে বৃহত্তর চিত্রনাট্যের অংশ? বিজেপি নেতৃত্ব প্রকাশ্যে নীরব থাকলেও চলতি মাসের (সেপ্টেম্বর) শুরুতে রাজস্থানে বৈঠক বসেছিলেন সঙ্ঘ ও বিজেপির শীর্ষ নেতারা। নীতিগতভাবে সঙ্ঘ ‘এক দেশ, এক ভাষা, এক ঝান্ডা এবং এক হিন্দু রাষ্ট্র’ গড়ার পক্ষে। তাদের দাবি, আঞ্চলিক দলগুলোর কারণেই ‘বিভেদের রাজনীতি’ তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রে একটি মাত্র দল থাকলে বিভেদ দূর করা সম্ভব।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।