মৌলভীবাজারে অস্ত্রের মুখে ৬৬ লাখ টাকা লুট, পুলিশ বলছে রহস্যজনক

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহসান বিন মুজাহির জেলা প্রতিনিধি , মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: শনিবার ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:০৯ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারে অস্ত্রের মুখে ৬৬ লাখ টাকা লুট, পুলিশ বলছে রহস্যজনক

মৌলভীবাজারে দেশীয় অস্ত্রের মুখে ১৩ জনকে জিম্মি করে ৬৬ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় পুলিশ বলছে, ঘটনাটি রহস্যজনক। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শহরের বনবিথি আবাসিক এলাকায় সৈয়দ বদরুজ্জামান ভবনে অবস্থিত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মৌলভীবাজার ডিপোতে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাত দলের তিন সদস্য দেশীয় অস্ত্রের মুখে ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে জিম্মি করে বেঁধে রেখে টাকা লুট করে নিয়ে যায়। 


বেক্সিমকো ফার্মার উপ-ব্যবস্থাপক রেজা মিয়া জানান, রাত আনুমানিক ৩টার দিকে তিন ডাকাত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ডিপোর বাইরে থাকা দারোয়ানসহ কর্মরত ঘুমন্ত ১৩ জনকে জিম্মি করে। এরপর তারা ডিপোর গেটের তালা ভেঙে তৃতীয় তলায় রেজা মিয়ার কক্ষের দরজা ভেঙ্গে সবাইকে হাত-পা বেঁধে রেখে ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ডিপো অফিসের লোহার লকার ড্রিল মেশিন দিয়ে ভেঙে কোম্পানির ৬৬ লাখ টাকা লুট করে। এছাড়াও রেজা মিয়ার কক্ষ থেকে তার স্ত্রীর দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১২ হাজার টাকা এবং ডিপোর সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক নিয়ে পালিয়ে যায়। 


মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে আলাপকালে বলেন, মাত্র তিনজন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ১৩ জন মানুষকে জিম্মি করে এতো বড় একটা ঘটনা ঘটিয়েছে, যা রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনার রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনাটি তদন্তের জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহসহ অন্যান্য প্রমাণাদি পরীক্ষা করছেন। তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ে দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। 


স্থানীয়রা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা শান্তিপূর্ণ এলাকায় অপরাধের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা পুলিশের দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। 


বেক্সিমকো ফার্মার কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ঘটনায় কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তারা আশা করেন, পুলিশ দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করে তাদের হাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। 


এই ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা ও তদন্তের গতি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ আশাব্যঞ্জক। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা রোধে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন। 


ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের তদন্ত চলমান থাকলেও স্থানীয়রা আশা করেন, দ্রুতই রহস্যের সমাধান হবে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত হবে।