আদালতের নির্দেশে উত্তোলন করা হলো নিহত সবুজ মিয়ার লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
শাওন মোল্লা , জেলা প্রতিনিধি- জামালপুর
প্রকাশিত: বুধবার ২৯শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৮:২৮ অপরাহ্ন
আদালতের নির্দেশে উত্তোলন করা হলো নিহত সবুজ মিয়ার লাশ

জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোঁচা ইউনিয়নের পূর্ব কোনামালঞ্চ এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. সবুজ মিয়া (১৬) কে দাফনের পাঁচ মাস ২৫ দিন পর আদালতের নির্দেশে উত্তোলন করা হয়েছে। নিহত সবুজ গত বছর ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়া থানা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতালে মারা যান তিনি। পরদিন ৬ আগস্ট তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।


সবুজের মা, জরিনা বেগম, ৫১ জনের নামে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার পর আদালতের নির্দেশে পুলিশ বুধবার বিকেলে তার মরদেহ উত্তোলন করে। জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা কোনামালঞ্চ এলাকা থেকে মরদেহ উত্তোলন করতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা।


এ সময় নিহত সবুজের মা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, "কত স্বপ্ন ছিলো ছোট্ট পোলাডার সাথে। সব কিছুই শেষ। আমার বাজান সংসারের হাল ধরতে চাইছিল। তোমরা আমার পোলাডারে ফিরাইয়া দাও, আমার বাবারে আইন্না দাও। ওরে ছাড়া কেমনে বাঁচুম?" কান্নার মধ্যে একসময় তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। 


এদিকে, স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এ ঘটনা জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। 


এ বিষয়ে অফিসার মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে নিহত সবুজের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। 


এছাড়া, নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী দাবী করছেন, গুলিবর্ষণের ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। 


নিহত সবুজের পরিবার এবং প্রতিবেশীরা এখনও শোকাহত, তবে তারা আশা প্রকাশ করেছেন যে, বিচার হবে এবং তাদের ছেলে ফিরে পাবে ন্যায়বিচার। 


এ ঘটনাটি পুরো এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। সকলেই চাইছেন, এমন ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আর যেন না ঘটে। 


সবুজ মিয়ার মৃত্যু এবং তার পরিবারের অবস্থা এলাকায় একটি গভীর প্রভাব ফেলেছে, যা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা এবং সহানুভূতির অনুভূতি তৈরি করেছে।