ইতিবাচক সম্পর্ক চায় ভারত, জানাল অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৭ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৯:৫৪ অপরাহ্ন
ইতিবাচক সম্পর্ক চায় ভারত, জানাল অবস্থান

সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা কূটনৈতিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ঘটনায় ঢাকা ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ জানালে দিল্লি পাল্টা বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠায়। উভয় পক্ষ নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে, যা উত্তেজনার পাশাপাশি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বার্তাও বহন করে।  


শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল এ বিষয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ইতিবাচক দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তার মতে, এই সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর হতে হবে এবং ভারতের এ অবস্থান সবসময়ই ইতিবাচক।  


সীমান্তের বেড়া নিয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরে মুখপাত্র জানান, অপরাধমুক্ত সীমান্ত গড়ে তুলতে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, পাচার, এবং অন্যান্য অনৈতিক কর্মকাণ্ড রোধে কাঁটাতারের বেড়া, লাইট ও প্রযুক্তিগত ডিভাইস স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায় ভারত। এই পদক্ষেপে বাংলাদেশকে তাদের অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় তারা।  


ঘটনার সূত্রপাত পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের বেড়া নির্মাণ শুরুর পর। বিজিবি এতে বাধা দিলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তবে পরবর্তী সময়ে ভারত সীমান্তে বেড়া নির্মাণ কার্যক্রম স্থগিত রাখে।  


ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সীমান্তে বেড়া নির্মাণ দুই দেশের পূর্ববর্তী চুক্তির আওতায় করা হচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ জানিয়েছে, সাবেক সরকারের আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে। এ পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক স্তরে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।  


সীমান্ত এলাকায় অপরাধ দমনে দুই দেশই একমত হলেও বেড়া নির্মাণের পদ্ধতি ও কার্যকারিতা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিজিবি সরাসরি বাধা দেওয়ার ঘটনা ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। তবে আলোচনা অব্যাহত থাকায় কূটনৈতিক সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।  


ভারতীয় কূটনীতিকরা আশা প্রকাশ করেছেন, আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের উদ্বেগ সমাধান হবে। বাংলাদেশ সরকারও সীমান্ত অপরাধ দমনে তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।  


পরিস্থিতি যতটা জটিলই হোক, দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং জনগণের পারস্পরিক উপকারের দিকটি মাথায় রেখে সীমান্ত সমস্যার সমাধান খুঁজতে দুই পক্ষই আন্তরিক। এমন উত্তেজনার মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার যে সংকেত উভয় পক্ষ দিচ্ছে, তা ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।