শাহজাদপুরে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ, ফেঁসে যাচ্ছেন কাজী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ১০ই নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৩১ অপরাহ্ন
শাহজাদপুরে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ, ফেঁসে যাচ্ছেন কাজী

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নিকাহ্ রেজিস্ট্রার সমিতির সভাপতি কাজী হাফিজুর রহমান এবং রায়গঞ্জের ধুবিল ইউনিয়নের কাজী সেরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ করানোর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী হাফিজুল ইসলাম গত ০৫ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন, যাতে তিনি দাবী করেছেন যে, তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার জন্য ওই দুই কাজী যুক্ত ছিলেন।


ভুক্তভোগী হাফিজুল ইসলাম অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার সাথে ফাতেমা খাতুন নামের এক মেয়ের ফোনে পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে ১০-১৫ দিন ফোনে কথা হয়। পরে, তিনি বাড়ি যাওয়ার পথে তালগাছি বাস স্ট্যান্ডে কিছু লোক তাকে ঘিরে ফেলে এবং তার কাছ থেকে ৭০,০০০ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে। এরপর তাকে ওই মেয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করার জন্য দুইজন কাজীকে নিয়ে আসে। মেয়ের বয়স পূর্ণ না হওয়া সত্ত্বেও তারা তাকে বিবাহ পড়ানোর চেষ্টা করেন, তবে পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় কাজীগণ বিবাহ না পড়িয়েই চলে যান।


অভিযোগকারী হাফিজুল ইসলাম বলেন, “রাতে আনুমানিক ৩.৩০ ঘটিকার সময় আমাকে মোটরসাইকেলে তুলে শাহজাদপুর নগরডালা গ্রামের কাজী হাফিজুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়, যেখানে আমাকে মারধর করে ২৭,০০০ টাকা দিয়ে একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়। এরপর কাজী সিরাজুল ইসলাম এবং কাজী হাফিজুর ইসলামের উপস্থিতিতে ৪ লক্ষ টাকা কাবিনে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়।”


তিনি আরও বলেন, “আমরা কাজী সেরাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি কোনো প্রমাণ দেখাতে রাজি হননি এবং তদন্তের জন্য চাপ দিলে কাবিনের টাকা আরও বাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন।”


এদিকে, ফাতেমা খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে কাজী হাফিজুল ইসলামকে আটকের পর কিছুটা মারধর করা হয়েছে। আমাদের বিয়ে শাহজাদপুর হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের কাজী হাফিজুর রহমানের অফিসে বসে কলমা ও কাবিন করে।”


কাজী হাফিজুর রহমান অভিযোগের বিষয়ে বলেন, “এটি আমি করিনি। এই বিয়ে নিয়ে সমস্যা থাকায়, রায়গঞ্জ উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের কাজী সেরাজুল ইসলামকে দিয়ে বিয়েটি পড়ানো হয়েছে। তবে আমি বিয়ের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলাম।”


এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার শরিফ সৌরাভ বলেন, “এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্তের জন্য শাহজাদপুর সাবরেজিস্টারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”