মণিপুরে রক্ষায় কারফিউ, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:৪৫ অপরাহ্ন
মণিপুরে  রক্ষায় কারফিউ, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে চলমান সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে রাজ্য প্রশাসন কারফিউ জারি করেছে। ইম্ফল পূর্ব এবং ইম্ফল পশ্চিম জেলার পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। একই সঙ্গে, আগামী পাঁচ দিনের জন্য মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো জারি করা হয়েছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ২০২৩-এর ধারা ১৬৩-এর অধীনে। এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার পেছনে মূলত জননিরাপত্তা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রয়াসই ছিল মূল উদ্দেশ্য।


ইন্ডিয়া টুডে এবং এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজ্যের নাগরিকদের নিজ নিজ বাসস্থানের বাইরে চলাফেরা সীমিত রাখতে বলা হয়েছে। এই কঠোর পদক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে। জনসাধারণের মাঝে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে, কারণ যে কোনো মুহূর্তে সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


উল্লেখ্য, গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) মণিপুরের জিরিবামে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ব্যাপক হামলা চালায়। তারা একের পর এক মর্টার, রকেট, এবং ড্রোন ব্যবহার করে বেসামরিক এলাকাগুলোতে আক্রমণ চালায়। এ ধরনের সহিংস হামলায় সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।


পুলিশের সূত্র মতে, তল্লাশি অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্নাইপার রাইফেল, পিস্তল, বন্দুক, স্বল্প ও দূরপাল্লার মর্টার, রকেটবোমা এবং ড্রোন। উদ্ধারকৃত এইসব অস্ত্রের পরিমাণ এবং ধরণ থেকে বোঝা যায়, হামলাকারীদের প্রস্তুতি কতটা সুপরিকল্পিত এবং ভয়াবহ ছিল। 


এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভে নামে। তাদের এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।


মণিপুরের আইজিপি আই কে মুইভা জানান, গণতান্ত্রিক উপায়ে র‍্যালি ও সমাবেশ করার সুযোগ রয়েছে এবং আমরা জনগণের অধিকারকে সম্মান করি। তবে, তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান, শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিজেদের দাবি তুলে ধরার জন্য। গেল কয়েকদিনের সংঘাতে যেমন সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তেমনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও হতাহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে। 


এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে ধৈর্য ধরার এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।