গত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। রাত শেষে ভোরে আলো ফুটলেও কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে থাকে চারপাশ। একটু বাতাস বইলেই কেপে উঠছে শরীর। আর তাতে বুঝা যায় দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের কারিগররা। শীত মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি হিসাবে হিড়িক পরে গেছে লেপ-তোষক বানানোর দোকানে। অনেক পরিবারের লোকজন তাদের বাক্সে ভর্তি রাখা লেপ-তোষক বের করে মেরামত করছে।
কারিগররা বলছেন, কিছুদিন পরে ক্রেতাদের ভিড় আরো বাড়বে। ক্রেতাদের এই আনাগোনা চলবে পুরো শীত জুড়ে। এদিকে ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে শীতের পুরাতন কাপড় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যাদের লেপ-তোষক কেনা বা বানানোর কেনা নেই তারা ভিড় জমাচ্ছে ওইসব দোকানে। সেখানে দেড়শ থেকে দুইশ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ভালো মানের পুরানো কাপড়। কেউ আবার অল্প টাকায় পাতলা কম্বলও ক্রয় করছেন।সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, লেপ-তোষকের দোকানের সবকটিতেই ছিল কারিগরদের লেপ বানানোর ব্যস্ততা। দোকানিরাও অর্ডার গ্রহণ এবং ক্রেতাদের বিভিন্ন রঙ ও মানের কাপড় এবং তুলা দেখাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
গোবিন্দাসী বাজারের লেপ-তোষক ব্যবসায়ী রাজু আহমেদ জানান, তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ-তোষক তৈরির খরচ। এ বছর জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাভাবিক ভাবেই লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ একশ থেকে দুইশ টাকা বেড়ে গেছে। আর একটি লেপ-তোষক বিক্রি করে তাদের ২'শ থেকে ৩'শ টাকা লাভ হয়। এদিকে, শীতের আগমনী বার্তার সাথে পাল্লা দিয়ে শীত নিবারণের উপকরণ লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। কারণ প্রতিটি এলাকাতেই শীত জেকে বসার আগেই শীত নিবারণে ওই সব লেপ-তোষক তৈরির দোকানে ভিড় করছে এ অঞ্চলের মানুষ। শীতের কারণে অনেকে শীত নিবারণের জন্য হালকা কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু করছেন।
ব্যবসায়ী মোঃ হুরমুজ আলী জানায়, শীতের আগমনীর সাথে ভূঞাপুরের বিভিন্ন লেপ-তোষক কারিগর ও ব্যবসায়ীদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার ছোট-বড় হাটবাজার গুলোতে জাজিম, বালিশ, লেপ, তোষক তৈরি ও বিক্রির কাজে কারিগর ও ব্যবসায়ীরা নিয়োজিত। কাপড়ের মান বুঝে লেপ-তোষকের দাম নির্ধারণ করা হয়। ৪-৫ হাত লেপের দাম পড়ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। আর তোশক তৈরিতে দাম পড়ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে। তবে কেউ কেউ বলছেন, এবার তুলার দাম বেশি। কালার তুলা প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিশালী তুলা ৪০ টাকা, সিম্পল তুলা ৫০ টাকা, শিমুল তুলা ৩৫০ টাকা ও সাদা তুলা ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষক তৈরি ও বিক্রি আরো বাড়বে এমনটি প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।