প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৩৬
বহুমুখী প্রতারণা, অভাবনীয় কৌশলে মোবাইল ফোন চুরী করে ফেসবুক আইডি দখলে নিয়ে নিরীহ মেয়েদের ব্ল্যাকমেইল। সাইবার ক্রাইম সিআইডির হাতে গ্রেফতার ১। প্রেমের ফাঁদে ফেলে সুন্দরী যুবতীদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন রাতুল। এরপর সেই যৌনদৃশ্য ভিকটেমের মোবাইলে ধারণ করে মোবাইল নিয়ে গোপনে সটকে পড়তেন। মোবাইল বিক্রির পূর্বে ভিকটিমের ভিডিও কন্টেন্ট এবং ফেসবুক আইডির দখল নিয়ে রাখতেন রাতুল। সেটা দেখিয়ে দিনের পর দিন ওইসব তরুণীদের ব্লাকমেইল করতেন।
এমন একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবার পুলিশ সেন্টার সিআইডি গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানী বাংলামোটর এলাকা থেকে মোহাম্মদ ইয়াসিন রাতুল কে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। গ্রেফতার কালে তার কাছে থাকা প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেইলে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল সেট, দশটি সীম উদ্ধার হয় যার ভিতর চারটি ফেইক ফেসবুক আইডি এবং নয়টি জিমেইল একাউন্ট পাওয়া যায়। জানা গেছে, মোহাম্মদ ইয়াসিন@ রাতুল পিতা-মোহাম্মদ আবু তাহের, মাতা-মোছাম্মদ ফাতেমাবেগম, ঠিকানা- একতারপুর পোস্ট- পাক হরিশপুর- থানা-বিজয়নগর, জেলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করে ঢাকার মিরপুরে চলে আসেন। প্রথমে স্হানীয় এক নেতার বাসায় চা বয় হিসাবে কাজ নেন। পরবর্তিতে মোহাম্মদপুর রিংরোডে এক শো রুমে সেলসম্যানের চাকুরী নেন। হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দিয়ে অপরাধের পথে পা বাড়ান। যৌন ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কাজে জড়িয়ে পড়েন।
সে আমার মোবাইলে থাকা বিকাশের ১০০০০ টাকা নিয়ে নেয এবং পরেরদিন ন্যুড ভিডিও দিয়ে আমাকে হুমকি দেয় যে ২৫০০০ টাকা না দিলে আমার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দিবে। আমার ফেসবুক আইডিও সে তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। সে আমাকে এবং আমার মা বাবাকেও ফোন করে চাপ দেয় টাকার জন্য। টাকা না পেলে আজ ৪ টার পর সে ভিডিও ছড়িয়ে দিবে।এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি সাইবার ক্রাইম রাতুলকে গ্রেফতার করে এবং ব্যবহ্রত সকল মোবাইল উদ্ধার করে সেখানে অন্তত দশজন ভিকটিমের তথ্য পায়। তাদের সবারসহ অনেক মেয়ের ন্যুড কন্টেন্ট পাওয়া যায় রাতুলের মোবাইলে। ফেক কল এবং ভুয়া হিস্ট্রীর অ্যাপস সহ প্রতারণায় ব্যবহ্রত নানান টেকনলজি বিষয়ে রাতুলের মোবাইলে প্রচুর তথ্য পাওয়া যায়।
এভাবে ভিকটিমের সাথে উক্ত আইডিধারী আসামি সুসম্পর্ক তৈরি হয়। পরবর্তীতে এই সম্পর্ক প্রেমের রূপ লাভ করে। রাতুল এমন বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে সকল ভিকটিমদের বিশ্বাস আস্হা অর্জনকরে। আসামি ভিকটিমদের ভিডিও কলে আসার প্ররোচনা দেয় পরবর্তীতে সেই ন্যুড ভিডিও স্ক্রিন রেকর্ড করে রাখে। এরপর আসামি ভিকটিমদের দেখা করার জন্য ডেকে আনে, প্রথম দেখাতেই সে ভিকটিমের ফোন মোবাইল কৌশলে চুরি করে পালিয়ে যায়। চুরিকৃত মোবাইল হতে তথ্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে ফরমেট দিয়ে সে মোবাইল বিক্রি করে দেয়। বিক্রির পূর্বে ভিকটিমের ফোনের ফেসবুক, জিমেইলএকাউন্টে দখল করে নেয়।সেই হ্যাককৃত ফেসবুক এর সহায়তা নিয়ে পরবর্তী কোন অন্য এক ভিকটিমকে টার্গেট করে।