প্রকাশ: ৭ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৫৩
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সাতক্ষীরার তালার এক যুবক। তার নাম রিয়াদ হোসেন বাবু।২৫ বছর বয়সী রিয়াদ তালা উপজেলার হরিসচন্দ্রকাটি গ্রামের শেখ মঞ্জুরুল রহমানের ছেলে।বিষপানের কয়েক মিনিট আগে রিয়াদ হোসেন তার ‘ত্যাড়া মুন্সী বাবু’ নামে ফেসবুক আইডিতে পারিবারিক আবেগঘন এবং রাজনৈতিক বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। সেখানে পারিবারিক নানা অশান্তির কথা তুলে ধরেন। স্ট্যাটাসে তিনি নিজেকে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবেও দাবি করেন।
যেদিন আমার হাতটা ছেড়ে দিয়েছিলেন সোহাগ দাদা। আমার বাঁচার শেষ আশাটুকু ছিলেন ওনি। অঝোরে কেঁদেছি সারা রাত এই কদিন। প্রতি রাতে বালিশ ভিজিয়েছি চোখের জলে। একটি বারও খোঁজ নাওনি কেমন ছিলাম আমি। আর, দোস্ত তোদের অনেক ধন্যবাদ। ফেসবুকে আমাকে নিয়ে লেখালেখি করছিস। তবে কি জানিস? বাস্তবে এতটা সময় তোরা যদি দিতি...তাহলে, না থাক কিছু না, জানি তোমরা খুব কাঁদছো। জানি খুব ভালবাসতে আমাকে। হয়তো ঘৃণাও করতে অনেকে। যদি আর একটু খোঁজ করতে, আমার সমস্যাগুলো শুনতে...যদি আমার দিকে আর একটু খেয়াল রাখতে...যদি সবকিছু নির্ভয়ে বলতে পারতাম তোমাদের...তাহলে আজ হয়তো...ছোট বোন, কাঁদিস না লক্ষীটি।
হয়তো সব থেকে বড় অন্যায়টা তোর সাথে হলো! মাফ করে দিস তোর এই অপরাধী ভাইটিকে। জানি এই ভুলের কোনো ক্ষমা নেই। ভাল থাকুক ভালবাসার মানুষগুলো। দূর থেকে না হয় দেখলাম সবার হাসি মাখা মুখ। ভাল থেকো সবাই, হয়তো ফেরার ইচ্ছা থাকলেও চাইলে পারবো না। ক্ষমা করে দিয়ো তোমাদের সন্তানকে। এখানে খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। সবাইকে ছেড়ে থাকাটা অনেক অনেক বেশি কষ্টের। অনেক বেশি ভুল করে ফেলেছি। ইশশ যদি আর একটু সময় পেতাম। কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব না। ভাল থেকো সবাই। দূর থেকে দেখবো সবাইকে। ভালো থাকুক ভালবাসার মানুষগুলো।’
তাই তো সে নিজের জীবন দিছে তবুও হার মানেনি, লড়াই করে গেছে অন্যায় এর বিপক্ষে সারাজীবন। আমিও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে পারিনি তাই আমি খারাপ। আমার জীবনে আজ অবদি যতো খারাপ সময় তার সব কিছু এই রাজনীতির জন্যে। ভবিষ্যতের কথা ভাবিনি কখনো, আজ জীবনের এই শেষ সময় ক্যানো জানি মনে হচ্ছে এই ছাত্রলীগের নেশাটাই আমাকে শেষ করে দিলো। হারিয়েছি সব, ঘর, পরিবার, ভালোবাসার মানুষ, কাছের মানুষ সব সব কিছু হারিয়েছি এই রাজনীতির জন্যে। তাই চলে গেলাম এই নিষ্ঠুর স্বার্থের পৃথিবী থেকে ক্ষমা করে দিবেন আমাকে।’নিহতের চাচা শেখ মেজবর জানান, কি কারণে সে আত্মহত্যা করছে তা আমার জানা নেই।