প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২০, ২২:৪৪
শিক্ষার্থীদের চলমান সেমিস্টার ফি মওকুফসহ পূর্ব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।জবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিশু কতৃক প্রেরিত এ বার্তায় বলা হয় যে,১৬১ বছরের পুরোনো ইতিহাস আর ১৫ বছরের গৌরবোজ্জল সাফল্যের স্বাক্ষী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। পাঠশালা থেকে স্কুল, কলেজ হয়ে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, উচ্চ শিক্ষায় এই প্রাচীণ বিদ্যাপিঠের অবদান ও ত্যাগ অসামান্য। সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
সাম্প্রতিক করোনা সংকট মোকাবিলায় লকডাউনসহ নানা কড়া পদক্ষেপের ফলে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে৷ অসংখ্য মানুষের রুজিরোজগারে টান পড়ছে৷ উৎপাদনশীলতাও মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার এই সংকটের বাইরে নয়। দীর্ঘ আট মাস বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। যেসব শিক্ষার্থীরা খণ্ডকালীন চাকুরী কিংবা টিউশন করে নিজেদের শিক্ষা খরচ বহন করতো এই সংকটের কারণে অধিকাংশই বন্ধ রয়েছে এবং তাদের পরিবারগুলোর অবস্থা নাজুক।
খুবই দুঃখজনকভাবে এরই মাঝে বিভিন্ন বিভাগ থেকে নতুন সেমিস্টারে ভর্তির নোটিশ দেয়া হচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই সংকটময় মূহুর্তে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই বাড়তি ব্যয় বহন করা প্রায় অসম্ভব। তাই বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে চলমান সেমিষ্টারের ভর্তি ফি মওকুফের দাবি জানাচ্ছি।বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শুরু থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে অধিকার আদায়ে সোচ্চার। আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, করোনার এই মহামারীতে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক যেসব দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক পূরণের আশ্বাস দেয়া হয়েছে কিন্তু এখনো বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি-
১. ‘ইন্সট্রুমেন্টাল এক্সেস এ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ার পর দুইটা পিসিআর মেশিন স্থাপন ও গত জুলাই মাস হতে করোনা ভাইরাস টেস্ট করার আশ্বাস দেয়া হয়েছিলো।
২. নতুন অত্যাধুনিক মেডিকেল সেন্টারের কাজ গত সেপ্টেম্বর এর মাঝে শেষ হওয়ার থাকলেও এখনো পর্যন্ত কাজ শুরু করতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৩. বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আগেই স্বল্পমুল্যে ৩০ জিবি ইন্টারনেট ডাটা ও প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল দেয়ার প্রতিশ্রুতি আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি, যেটাও আলোর মুখ দেখেনি।
৪. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করে শিক্ষাবৃত্তির জন্য সুপারিশ কমিটি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই সংকট সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে।
৫. গত বাংলা বর্ষবরণ, মুজিববর্ষ পালন না হওয়ায় সেই টাকা করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে খরচ করার প্রতিশ্রুতিও কেউ মনে রাখেনি। সাম্প্রতিক বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বাজেটও সংকুচিত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষঙ্গিক খরচও থেমে আছে কিন্তু শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি বিজ্ঞপ্তি থেমে নেই।
৬. ইউজিসির নির্দেশনায় অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ডিভাইস কেনার সফট লোনের তালিকাও কাজে আসেনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবলোকন করেছে, কিভাবে করোনা সংকটকে পূঁজি করে একের পর এক আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে এই প্রশাসন প্রতারণা করেছে। আমরা হুঁশিয়ারী করে বলে দিতে চাই, বারবার এমন প্রতারণা শিক্ষার্থীরা মেনে নিবে না। উল্লেখিত বিষয়গুলো শীঘ্রই বাস্তবায়ন করার দাবি জানাই। অন্যথায় অতীতের ন্যায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য পাওনা বুঝে নিবে।আজ ২২.১০.২০২০ তারিখে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিশু কতৃক প্রেরিত এক বার্তায় এইসব দাবি জানানো হয়।